শহরের মধ্যেই ‘এক খন্ড সুন্দরবন’

৪ সপ্তাহ আগে
চট্টগ্রাম শহরের বাড়ির আঙিনার মধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে এক টুকরো সুন্দরবন। বলছিলাম, আলওয়ান মধু জাদুঘর ও গবেষনা কেন্দ্রের কথা। যেখানে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও দেশের মধ্যে পাওয়া পাঁচ ধরনের মৌমাছির চাষ করা হচ্ছে।

মধু জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশি মধুর ব্র্যান্ডিংয়ে এ গবেষণা কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব।


সুন্দরবনের নানা রকম গাছের বীজ সংগ্রহ করে ও সুন্দরবনের লবনাক্ত পানি ও জোয়ার-ভাটার হিসাব ব্যবহার করে গরান, কাঁকড়া, সুন্দরী, গেওয়া, বাইন,  হরগোজা, গোলপাতা, কেওড়া, কালিলতা, পশুর, খলিশা, টাইগার ফার্নসহ সুন্দরবনের উপকূলীয় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে এখানে।


বাংলাদেশের ভালো মধুর বেশির ভাগই পাওয়া যায় সুন্দরবন থেকে।  পাঁচ ধরনের মৌমাছির চাষ করা হচ্ছে এখানে। এর মধ্যে একটি এপিস সিরানা। সেই সাথে সংগ্রহে আছে বহু ধরনের মৌমাছি ও মধুর চাকের নমুনাও। কোন মৌমাছির স্বভাব কেমন, কোন গাছের ফুল থেকে কেমন মধু পাওয়া যায় সব তথ্যেই আছে এই মিনি সুন্দরবনে।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে জোড়া খুনের প্রধান আসামি হাসান গ্রেফতার

শনিবার (৩ মে) নগরীর সার্সন রোড এলাকায় অবস্থিত গবেষনা কেন্দ্রটি দেখতে আসেন কৃষি মন্ত্রনালয়ের সচিব সহ কয়েকজন। আলওয়ান মধু জাদুঘর ও গবেষনা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ মুহাম্মদ মঈনুল আনোয়ার জানান, সুন্দরবনকে টিকিয়ে রাখার জন্য, ভবিষ্যত প্রজন্মের সুন্দরবনের প্রতি যাতে ভালোবাসা সৃষ্টি হয় সেই উদ্দেশ্য নিয়ে  আলওয়ান মধু জাদুঘর ও গবেষনা কেন্দ্র করা হয়েছে।


দেশে প্রাকৃতিক মধুর সবচেয়ে বড় উৎস সুন্দরবন। ঘ্রাণ ও স্বাদে অতুলনীয় সুন্দরবনের মধুর বিশ্বজোড়া চাহিদা আছে। দেশের সুন্দরবনের মধু আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল।
আমি ২০ বছরের বেশি সময় ধরে মধু নিয়ে গবেষণা করছি। আমার উপলব্ধি হল গাছ না থাকলে ফুল হবে না। ফুল না হলে মধু হবে না। বর্ষার সময় গাছ থেকে যে বীজ গুলো পরে, কার মধ্যে কিছু চারা হয়। কিছু নষ্ট হয়ে যায়।কিছু আগুনের জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।বীজগুলো সংগ্রহ করে আমার আঙিনায় লাগালাম। বাগান করলাম। মোটামুটি সফল হয়েছি, বাচাতে পেরেছি।সুন্দরবনের একটা গাছকে ও যদি আমি ছড়িয়ে দিতে পারি তাহলে সুন্দরবনের একটা গাছ থাকলে সুন্দরবনের প্রতি আগ্রহী হবে। সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হলে আওয়াজ করবে। বিশ হাজারের মতো মৌমাছির প্রজাতি আছে। পাঁচ রকমের মৌমাছি নিয়ে আমরা কাজ করতে পারি।এপিস মেলিফেরা, এপিস সিরানা সহ বিভিন্ন ধরনের মৌমাছি আছে।

আরও পড়ুন: সুন্দরবনের মধুসহ জিআই সনদ পেল ২৪ নতুন পণ্য

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘সুন্দরবনের মধু জিআই পণ্য হিসেবে সদ্য স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশি মধুর নতুন ব্র্যান্ডিং হতে এ গবেষণা কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।এটি একটি ভিন্ন মাত্রার জিনিস। দেখার চেষ্টা করলাম। বিজ্ঞানীরা যে গবেষনা গুলো করেন, তাতেই সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার চেষ্টা করা হয়।যাতে ইকেনমিক ভেল্যু বাড়ে।অর্থনৈতিকক ভাবে লাভবান হন।আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে। এ ধরনের উদ্যাগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।’


দেশ-বিদেশে সুন্দরবনের মধুর ব্যাপক চাহিদা আছে। জিআই পণ্যের স্বীকৃতিতে মধুর চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারনা সংশ্লিষ্টদের।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন