মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কোর্ট মোড়ে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় মিছিলে ঝাড়ু, জুতা এবং লাঠি প্রদর্শনের মাধ্যমে নেতাকর্মীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে যোগ্য ও প্রকৃত ছাত্রনেতাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত এবং অযোগ্য ব্যক্তিদের পদ দেয়া হয়েছে। বক্তারা জানান, ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক এইচ.এম জাকির হোসেন একজন শ্রমিক নেতা, দুই সন্তানের জনক এবং জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের পদপ্রার্থী ছিলেন। তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও অভিযোগ করেন তারা।
বক্তারা আরও বলেন, এইচ.এম জাকির হোসেন ২০০০ সালে তার শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন। অথচ ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ২০০৩ সালের পর ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত ব্যক্তিরাই জেলা কমিটিতে আসতে পারেন। ফলে এই কমিটি গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও অগ্রহণযোগ্য।
স্থানীয় ছাত্রদল নেতা বাবু মাদবর বলেন, ‘যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে তিনি বয়সে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতির চেয়েও বড়। তার পরিবারের ৯৫ শতাংশ লোক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। একজন শ্রমিক নেতাকে ছাত্রদলের শীর্ষ পদে বসানো সংগঠনের সাথে ভাঁওতা করার শামিল। এ কমিটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, নইলে কঠিন আন্দোলনে যাব।’
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থী ও সদ্য ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পান্থ তালুকদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা মাঠে-ঘাটে ছাত্র রাজনীতি করছি। অথচ শ্রমিক নেতা ও দুই সন্তানের জনক এইচ এম জাকির হোসেনকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। আমরা এই কমিটি মানি না।’
আরও পড়ুন: মাগুরায় ছাত্রদলের মশাল মিছিল, ‘পকেট কমিটি’র বিরুদ্ধে ক্ষোভ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের পুরোনো কমিটি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিলুপ্ত করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন জেলার ছাত্রদল কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল। এরই মাঝে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের স্বাক্ষরিত ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি মঙ্গলবার (৩ জুন) অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এই কমিটিতে এইচ.এম জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক ও সোহেল তালুকদারকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক এইচ.এম জাকির হোসেন বলেন, 'একটি কমিটি হলে সবাইকে খুশি করা সম্ভব না। যারা ত্যাগী, তাদেরকে বেছে নিয়েই কেন্দ্রীয় ছাত্রদল কমিটি করেছে। আমাকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামীতে সুশৃঙ্খলভাবে কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।'
ছাত্রদলের এই অভ্যন্তরীণ বিরোধের ফলে জেলার ছাত্র রাজনীতিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নেতারা দ্রুত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।