শরীয়তপুরে ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের সড়ক অবরোধ, সাবেক সভাপতিকে মারধর

৪ সপ্তাহ আগে
টানা তৃতীয় দিনের মতো আন্দোলন করছেন শরীয়তপুরে নবগঠিত ছাত্রদলের কমিটির পদবঞ্চিত নেতারা। নতুন কমিটি অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিলের দাবিতে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদলের কমিটির বিদ্রোহী পক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুর ১২ টায় শরীয়তপুর সরকারি কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় জড়ো হয় ছাত্রদলের প্রতিবাদী নেতারা। এ সময়ে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। এতে ঘণ্টাব্যাপী সড়কের উভয়পাশে অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। 


চরম ভোগান্তিতে পড়ে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ। এসময়ে ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে পদবঞ্চিত নেতারা কমিটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে এক ঘণ্টা অবরোধ শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে অবরোধ তুলে নেন তারা।


এরপর তারা মিছিলরত অবস্থায় ধানুকা শরীয়তপুর সরকারি কলেজ এলাকায় অবস্থান করেন। এ সময়ে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন মুন্সী ও তার স্ত্রী মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে মোটরসাইকেল থামিয়ে তাদের দুজনকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এতে রুহুল আমিন মুন্সী গুরুতর আহত হয়। তাকে নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ছাত্রদল নেতা হত্যায় ডা. দীপু মনিসহ ৪৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সাবেক ছাত্রনেতা রুহুল আমিন মুন্সির স্ত্রী অ্যাডভোকেট মনি বলেন, ‘আমরা কোর্টের কাজ করে বাড়ি ফিরছিলাম। ধানুকা বাজারে এলে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী আমাদের মোটরসাইকেল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে আমার স্বামী রুহুল আমিনকে ব্যাপক মারধর করে। আমাকেও তারা লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে। তাদের কাছে লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্র ছিল। স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার না করলে হয়তোবা আমার স্বামীকে তারা মেরে ফেলত। যারা আমার স্বামীর ওপর আক্রমণ করেছে, তাদের চিহ্নিত করে দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’


এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আমান মাদবর বলেন, ‘যারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে, আমি মনে করি তারা সংগঠনের কেউ নয়। তারা বিএনপি করতে পারে না। যদি সংগঠনের কোনো ব্যক্তি থাকে, তাকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে।’ 


গুরুতর আহত রুহুল আমিন মুন্সী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই শরীয়তপুর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত কিছু ছাত্রনেতা আন্দোলন সংগ্রাম করছে, তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে। কিন্তু তারা যেভাবে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছে, সেটা কোনো বৈধ পথ নয়। যে কারণে আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সমস্যা নিরসনে কথা বলে আমার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। ধানুকা বাজারে যাওয়ার পরে ছাত্রদলের মিঠুর নেতৃত্বে আমার ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়। আমাকে লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। তারা আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলেছে।’ 

আরও পড়ুন: ছাত্রদলের আহ্বায়ক দুই সন্তানের জনক, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
 
এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্রদল এখন নিজেরাই তারা স্বনির্ভর, তারা এখন আর আমাদের কোনো কথা শোনে না। একটা সময়ে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা কমিটি হলে জেলা বিএনপির নেতাদের সহযোগিতা চাইতো, কাদেরকে দিলে দলটা ভালো চলবে, এ ধরনের সহযোগিতা চাইলেও এখন আর সেটা নেই। এখন ছাত্রদলের নেতারা নিজেরাই তাদের মনের মতো লোকদের নেতা বানিয়ে দেয়। বর্তমানে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের একটি ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি করেছে।’


এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ওসি হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছিল, তাদের বুঝিয়ে আমরা সরিয়ে দিয়েছি। তবে তারপরে মারধরের বিষয়টি আমরা পরে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন