লিচুর দাম বেশি হলেও লোকসানে বাগান মালিকরা!

২ সপ্তাহ আগে
পাবনার ঈশ্বরদীতে লিচুর ফলন বিপর্যয় হয়েছে। বাগান মালিকরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর হয়েছে অর্ধেকের কম। বাজারে ভালো দাম পেলেও লোকসান হচ্ছে। বেশি দামে লিচু কিনে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। তবে বিষয়টি প্রাকৃতিক বলছে কৃষি বিভাগ।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা। লিচু রাজধানী খ্যাত এই এলাকায় গত বছর যেখানে প্রতিটি গাছ লিচুর ভারে নুইয়ে পড়েছিল, এবছরের চিত্র তার পুরোটাই উল্টো। বেশিরভাগ গাছে ফলের দেখা নেই।

 

ঈশ্বরদীর ছলিমপুরের জয়নগর শিমুলতলা, সাহাপুরের আওতাপাড়া হাট ও বিভিন্ন বাগানে মৌসুমের শুরুতে প্রতিদিন ২০টি ট্রাক লিচু বেচাকেনা হতো। এবার ফলন বিপর্যয়ের কারণে দুটি ট্রাকও উঠছে না। ফজরের পর শুরু হতো লিচু বিক্রি। চলত সকাল ১০টা পর্যন্ত। এবার সকাল ৭টার আগেই সব শেষ।

 

আরও পড়ুন: প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে লিচুর ফলনে ভাটা, দুশ্চিন্তায় জামালপুরের চাষিরা

 

বাগান মালিকরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ফলন হয়েছে অর্ধেকের কম। বাজারে মোটামুটি ভালো দাম পেলেও লোকসান হচ্ছে। আর পাইকাররা জানান, বর্তমানে প্রকারভেদে প্রতি হাজার লিচু কিনতে হচ্ছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। এ কারণে খুচরা বিক্রি করতে গিয়ে লাভ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

 

সাহাপুর ও ছলিমপুরে তিন শতাধিক গাছ নিয়ে সাতটি বাগান কিনেছিলেন মানিকনগরের আবুল বাশার প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘মাত্র ৩০-৩৫ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। বাকি গাছে কিছুই আসেনি।’ তার প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা লোকসান হবে।’

 

জয়নগর কাঁচা ফলের আড়তদার রুবেল হোসেন বলেন, ‘কোনো কেনো বছর ফলন কম হয়েছে। গরমে কিছু লিচু ঝরেও পড়েছে। কিন্তু এবারের মতো বিপর্যয় আগে দেখিনি। আর দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে যা আছে তাও শেষ হয়ে যাবে। প্রতি বছর ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হতো। এবার ১০০ কোটিও হবে না।’

 

ঈশ্বরদী বাজারে ভালো মানের প্রতি হাজার বোম্বে লিচু বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায়। বিক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এবার লিচু কম। হাট থেকে এক হাজার লিচু কিনতে হয় প্রায় ৫ হাজার টাকায়। গাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে সাড়ে ৫ হাজারে বিক্রি করছি।’

 

আরও পড়ুন: ফলন বিপর্যয়ে অপরিপক্ব লিচুতেই সয়লাব ঈশ্বরদীর বাজার

 

প্রাকৃতিক কারণে এবার লিচুর কাঙ্ক্ষিত ফলন হয়নি বলে দাবি কৃষি বিভাগের। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, ‘এবার গাছে কম মুকুল এসেছে। এটি মূলত প্রাকৃতিক কারণে হয়েছে। সচরাচর লিচুর এক বছরের ফলন বেশি হলে পরের বছর এমনিতেই কম হয়।

 

এতে চলতি বছর লিচুর ফলন কম হয়েছে জানিয়ে তিন বলেন, তবে বাজারে লিচুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে যে কারণে দাম বেশি আছে। এই দাম অব্যাহত থাকলে কৃষক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এ ছাড়া কৃষকদের সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করছে।

 

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর পাবনায় লিচুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ হাজার ১২৮ মেট্রিক টন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন