পূজার সামগ্রী বিক্রেতাদের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়ে সরগরম পুরো এলাকা। কেউ প্রতিমা বেছে নিচ্ছেন, কেউ ফুল, কলাগাছ বা নানা উপকরণ কিনছেন। উৎসবের আমেজে মুখরিত হয়ে উঠেছে খুলনার পুরোনো এই বাজার।
রোববান বিকেল থেকেই বাজারে এমন দৃশ্য দেখা যায়। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এসে পূজার আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করছেন। দোকানে দোকানে সাজানো প্রতিমা, আলতা, ধূপ, ঘি, ফুল আর কলাগাছের পসরা।
বাজারের দোকানদার অমরেশ ঘোষ বলেন, ‘লক্ষ্মী পূজার সময় আমরা সারা বছর অপেক্ষা করি। এখন ক্রেতাদের ভিড় ভালোই আছে। মাটির প্রতিমার দাম ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে। ছোট প্রতিমা ৩০০ টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে। ফুলের দামও একটু বেড়েছে।’
আরও পড়ুন: দক্ষিণাঞ্চলের ৫ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট
একই কথা বললেন ফুল বিক্রেতা সুবল চন্দ্র বর্মণ। তিনি বলেন, ‘গাঁদার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। পদ্মফুলও অনেকেই খুঁজছেন। আগের বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি, তবে বিক্রি ভালো।’
কেনাকাটা করতে আসা শহরের টুটপাড়া এলাকার গৃহিণী প্রতিভা দাস জানালেন, ‘প্রতিবছরই পূজার আগে এখান থেকেই সব কিনি। এখন দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে, তবু পূজার আনন্দে সে ভাবনা নেই।’
আরেক ক্রেতা দীপংকর সাহা বলেন, ‘ঘর সাজাতে কলাগাছ, আলপনার উপকরণ আর নতুন প্রদীপ কিনেছি। সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে দেবীর আরাধনা করি—এই পূজা আমাদের ঘরের শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক।’
লক্ষ্মী পূজা মূলত আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, কোজাগরী রাতে লক্ষ্মী দেবী ধন, সম্পদ ও সৌভাগ্যের আশীর্বাদ নিয়ে ঘরে আসেন। পূজার আগে ঘরবাড়ি পরিস্কার করে সাজানো হয়, দরজায় আলপনা আঁকা হয়, সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে আরাধনা করা হয় দেবীর উদ্দেশে।
বাজারের দোকানগুলোতে দেখা গেছে, ক্রেতারা ভোগ সামগ্রী হিসেবে চাল, কলা, নারকেল, চিনি, দুধ, ঘি ও মিষ্টি কিনছেন। পূজার রাতে এসব দিয়েই দেবীর উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদন করা হয়।
বিক্রেতা নবীন চক্রবর্তী বলেন, ‘এখন থেকেই বিক্রি বাড়ছে, কিন্তু পূজার আগের দিনই মূল ভিড় হয়। অনেকেই শেষ সময়ে এসে কেনাকাটা করেন। আমরা রাত অবধি দোকান খোলা রাখি।’
আরও পড়ুন: দশ দিনের জন্য খুলনাঞ্চলের পাঁচ জেলার পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত
শহরের হেলাতলা মোড়ের চারপাশে ফুলের গন্ধ আর পূজার সুর সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই ব্যস্ত দেবী লক্ষীর আগমনের প্রস্তুতিতে।