মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের পেরিয়ে গেছে ৮ বছর। বিশ্বের অন্যতম আলোচিত এই মানবিক সংকট সামাল দিতে অনেক ক্ষমতাধর দেশ ও সংস্থা বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস-প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রত্যাবাসনে নেই কোনো অগ্রগতি। এতদিনে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো তো যায়ইনি, উল্টো এখনো বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছেন রোহিঙ্গারা।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, জটিল ভূ-রাজনীতি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতায় ঘাটতির মতো পুরনো চ্যালেঞ্জগুলো যেমন রয়েছে, তেমনি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান, অভ্যন্তরীণ সংঘাতের মতো নতুন নতুন ইস্যু যুক্ত হওয়ায় আরও জটিল করে তুলেছে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে কেবল বাংলাদেশের উদ্যোগই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন প্রভাবশালী দেশগুলোর কার্যকর ভূমিকা আর বাস্তবমুখী উদ্যোগ।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সমস্যা হতে যাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির সময় সংবাদকে বলেন,
বস্তুগত অর্থে অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান বা প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে চীন, ভারত ও রাশিয়া মুখে বললেও তাদের আলাদা আলাদ ভূ-কৌশলগত লক্ষ্য রয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সমন্বিত করার যে চেষ্টা আমরা করছি, তাতে সফল হতে পারছি না। আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের যে ব্যবস্থাটার প্রতি আমাদের আগ্রহ আছে, সেখানে চীন ও রাশিয়া আমাদের সঙ্গে সহমত নয়।
অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, ‘অতীতের চেয়ে সংকট বেড়েছে বলে মনে হয়। আগের সমস্যাগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সশস্ত্র সংঘাত, যুদ্ধাবস্থা এবং ভূ-রাজনীতির জায়গা। এর মধ্যে অস্ত্র বাজারেরও একটা ভূমিকা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের উপায় হলো প্রত্যাবাসন: চীনা রাষ্ট্রদূত
রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমার সরকারের পাশাপাশি আরাকান আর্মির সঙ্গেও যোগাযোগের কথা বলা হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে। তবে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে বিশ্লেষকদের মধ্যে। তারা বলছেন, প্রথাগত কূটনীতি এড়াতে চাইলে জাতীয়ভাবে ঐকমত্য থাকা প্রয়োজন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যেহেতু পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিচ্ছে, তাই এগোতে হবে সতর্কতার সঙ্গে, কৌশলগত সব দিক বিবেচনায় নিয়ে।
]]>