রোববার থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা

২ সপ্তাহ আগে
গাজাবাসীর জন্য বহুল প্রতীক্ষিত দিন রোববার। সকাল থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরা চলা রক্তক্ষয়ের অবসান হতে যাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতায় সহায়তাকারী কাতারের পক্ষ থেকে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এ তথ্য জানানো হয়। এতে আরও মধ্যস্থতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর।

যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় টানা ১৫ মাসের সংঘাতের পর বুধবার (১৫ জানুয়ারি) গাজায় দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে একমত হয় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।

 

ওই চুক্তি অনুযায়ী রোববার (১৯ জানুয়ারি) যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। যুদ্ধবিরতির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার জানিয়েছে, এদিন গাজার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এটি কার্যকর হবে।

 

এদিকে ১৮ জানুয়ারি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। রোববার থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হওয়া এ চুক্তি হয়েছে।

 

বিবিসি ও আল জাজিরা জানায়, শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত হওয়া বৈঠক শেষে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী চুক্তির পক্ষে ভোট দেন, আটজন দেন বিপক্ষে।

 

আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেই আমাদের হামলা বন্ধ হবে: হুতি

 

ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই বৈঠকে কয়েকজন কট্টরপন্থী মন্ত্রী এ চুক্তির ঘোর বিরোধিতা করেন। বিরোধিতাকারীদের মধ্যে আছেন জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতমার বেন গভির ও অর্থ মন্ত্রী বেজালেল স্মৎরিচ।

 

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানায়, 'কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার ১০ মিনিট আগ পর্যন্ত আলোচনা চলছিল। শেষ মুহূর্তে কোনোভাবে একটি সিদ্ধান্তে আসা হয়েছে।

 

এ চুক্তির মাধ্যমে গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরা চলা ইসরায়েলি গণহত্যা অন্তত ছয় সপ্তাহের জন্য থামতে পারে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে শুরু হওয়া এ গণহত্যায় অন্তত ৪৬ হাজার ৭৮৮ জন নিহত ও ১ লাখ ১০ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে সিংহভাগই নারী ও শিশু।

 

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে। এর অধীনে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। প্রথম ধাপের ১৬তম দিনের মধ্যে দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। সেখানে বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীকে পুরোপুরি প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

 

তৃতীয় ধাপে নিহত জিম্মিদের মরদেহ ইসরায়েলের কাছে ফেরত দেয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এই কাজ মিসর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।

 

এদিকে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সমর্থন জানিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। সেই সঙ্গে বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেই ইসরাইল ও এর মিত্রদের স্বার্থকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা বন্ধ হবে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন গোষ্ঠীটির সিনিয়র রাজনৈতিক কর্মকর্তা ও মুখপাত্র মোহাম্মদ আল বুখাইতি।

 

এ হুতি কর্মকর্তা বলেন, ‘হুতিরা গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সমর্থন করে। রোববার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেই তারা গাজার সমর্থনে সামরিক অভিযান বন্ধ করবে।’ 
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন