রোনালদোর গোলে ২৫ বছর পর জার্মানিকে হারিয়ে ফাইনালে পর্তুগাল

২ সপ্তাহ আগে
সাম্প্রতিক সময়ে খেলোয়াড়দের ফর্ম ও ইনজুরি বিবেচনায় নিলে পর্তুগাল ভালো অবস্থানে ছিল। অন্যদিকে ইতিহাস ছিল জার্মানির পক্ষে, তার ওপর খেলাটাও তাদের নিজেদের মাঠে। উয়েফা নেশন্স লিগের প্রথম সেমিফাইনালে তাই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের প্রত্যাশাই ছিল সবার। কিন্তু মাঠের খেলায় পর্তুগালের সোনালি প্রজন্মের সঙ্গে পেরে উঠল না চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। আগে গোল করে জয়ের স্বপ্ন দেখলেও চিরতরুণ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও ফ্রান্সিসকো কনসিয়াকাও জ্বলে উঠে পর্তুগালকে এনে দিয়েছেন ঐতিহাসিক জয়। আর তাতেই দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে সেলেকাওরা।

বুধবার (৪ জুন) রাতে অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় উয়েফা নেশন্স লিগের প্রথম সেমিফাইনালে স্বাগতিক জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে পর্তুগাল। ফ্লোরিয়ান ভির্টজের গোলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে জার্মানি এগিয়ে গেলেও  ফ্রান্সিসকো কনসিয়াকাও ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ৫ মিনিটের ব্যবধানে পর্তুগালের পক্ষে গোল দুটি করে জয় এনে দেন।


এই জয়ে জার্মানির বিপক্ষে দীর্ঘ ২৫ বছরের জয়খরা কাটলো পর্তুগালের। এর আগে ২০২০ সালের ইউরোয় সবশেষ জার্মানিকে হারিয়েছিল পর্তুগাল। সেই ম্যাচে ৩-০ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল সেলেকাওরা।

 

আগামী রোববার (৮ জুন) অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ফাইনালে পর্তুগালের প্রতিপক্ষ হবে স্পেন বনাম ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বিজয়ী দল।


আরও পড়ুন: হামজার সঙ্গে ছবি তুলতে মাঠে ঢুকে পড়লেন এক ভক্ত


ঘরের মাঠে বলের দখলে জার্মানি এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে এগিয়ে ছিল পর্তুগালই। স্বাগতিকরা ৯টি শট নিয়ে ৫টি লক্ষ্যে রাখতে পারলেও পর্তুগিজরা ১৭টি শট নিয়ে ৬টি লক্ষ্যে রেখেছে।


প্রথমার্ধে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলা এগিয়ে গেলেও ডেডলক ভাঙতে পারেনি কোনো দলই। রোনালদো দুটি ভালো সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি। পেদ্রো নেতোও সুযোগ নষ্ট করেন। অন্যদিকে ফুলক্রুগ ও গোরেৎজেকার  দারুণ শট ঠেকিয়ে পর্তুগিজদের বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক কস্তা।


দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন রোনালদো। সতীর্থের বাড়ানো ক্রসে পা লাগাতে পারলেই গোল পেতে পারতেন, কিন্তু বলের নাগালই পাননি পর্তুগিজ অধিনায়ক। কিছুক্ষণ পরেই ব্রুনো ফার্নান্দেজ ডি-বক্সে ঢুকে বাঁকানো শট নিয়েছিলেন, যা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।


এর পরপরই ডেডলক ভাঙেন ফ্লোরিয়ান ভির্টজ। ডি-বক্সে বল নিয়ে ঢুকতে বাধা পেয়ে কিমিখকে পাস দেন লেভারকুসেনের তারকা। এরপর ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন। কিমিখ তাকে দারুণ এক থ্রুবল বাড়ান। আলতো হেডে বাঁ দিকের পোস্টে বল পাঠান ভির্টজ। এগিয়ে যায় জার্মানি।


 

Cristiano Ronaldo's international goals since turning 30 years old: 85

That's more than the all-time top scorers of:

🇧🇷 Brazil (Neymar, 79)
🏴󠁧󠁢󠁥󠁮󠁧󠁿 England (Harry Kane, 71)
🇩🇪 Germany (Miroslav Klose, 71)
🇸🇪 Sweden (Zlatan Ibrahimovic, 62)
🇫🇷 France (Olivier Giroud, 57)
🇳🇱… pic.twitter.com/E6qDTJdMse

— Football on TNT Sports (@footballontnt) June 4, 2025


গোল খেয়ে মরিয়া হয়ে ওঠে পর্তুগাল। রোনালদোর হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে ফের হতাশ হতে হয় তাদের।


অবশেষে ৬৩ মিনিটে পর্তুগিজদের ত্রাতা হয়ে আসেন কনসিয়াকাও। বদলি হিসেবে নামা জুভেন্টাসের এই উইঙ্গার দুর্দান্ত এক গোল করে সমতায় ফেরান পর্তুগিজদের। ডানপ্রান্তে বল পেয়ে দারুণ গতিতে ওপরে উঠতে থাকেন কনসিয়াকাও। ডি-বক্সের কাছাকাছি এসে আকস্মিকভাবে শট নেন। তার জোরাল শট দারুণ বাক খেয়ে জালে জড়ায়। জার্মানির গোলরক্ষক টার স্টেগান ঝাঁপিয়ে পড়েও শট ঠেকাতে পারেননি।


আরও পড়ুন: রাতে সেমিফাইনালে রোনালদোর পর্তুগালের প্রতিপক্ষ ইনজুরি জর্জর জার্মানি


এর পাঁচ মিনিট পর রোনালদো গোল করেন। মাঝমাঠে ব্রুনো ফার্নান্দেজের সঙ্গে বল দেয়া নেয়া করে বাঁ প্রান্ত দিয়ে ডি-বক্সে ঢুয়ে পড়েন নুনো মেন্দেজ। এরপর পাস বাড়ান ফাঁকায় দৌড়ানো রোনালদোকে। ট্যাপইনে বল জালে জড়াতে বেগ পেতে হয়নি পর্তুগিজ অধিনায়ককে। ৪০ বছর বয়সী রোনালদোর এটি জাতীয় দলের হয়ে রেকর্ড ১৩৭তম গোল।  আর সব মিলিয়ে তার গোলের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৩৭টি। বয়স ৩০ পার হওয়ার পর রোনালদো গোল করেছেন মোট ৮৫টি, যা নেইমার, হ্যারি কেন, মিরোস্লাভ ক্লোসাদের জাতীয় দলের ক্যারিয়ারের গোলসংখ্যার চেয়েও বেশি।


ম্যাচের শেষের দিকে কনসিয়াকাও ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। বল নিয়ে ফের জার্মানির ডি-বক্সে ঢুকে বাঁকানো শট নিয়েছিলেন তিনি। তবে তা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।


সুযোগ পেয়েছিল জার্মানিও। তবে করিম আদেয়েমির নেয়া শট পোস্টে লাগলে হতাশ হতে হয় তাদের। এর কিছুক্ষণ পর জোড়া শট ঠেকিয়ে জার্মানিকে টিকিয়ে রাখেন টার স্টেগান। এরপরেই শেষ বাঁশি বাজান রেফারি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন