ঈদের লম্বা ছুটি, তাই সাগরতীরে লাখো পর্যটকের সমাগম। বেলা বাড়ে তার সঙ্গে বাড়তে থাকে সৈকতে পর্যটকের আগমন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) বেলা ১২ বাজতেই ৩ কিলোমিটার সাগরতীরে জুড়ে ২ লাখের বেশি পর্যটক। কখনও ঝুম বৃষ্টি, কখনও রোদ কিংবা মেঘলা আকাশ। যা পর্যটকের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়েছে বহুগুণে। নোনাজলে মেতে ওঠার পাশাপাশি বালুচরে মেতেছেন ছবি তোলা কিংবা বালু নিয়ে খেলায়।
মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক আজাদ রহমান (৬০) বলেন, ‘অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর ঈদ আনন্দ অন্যভাবে উপভোগ করছি। আপনাদের বলছি, জীবনে নাতি ছাড়া কেউ কক্সবাজারে আসবেন না। অবশ্যই একবার নাতি নিয়ে কক্সবাজার এসে ঘোড়ার পিঠে চড়বেন, দেখবেন নিজেও ছোটবেলায় ফিরে যাবেন।’
শফিক রহমান বলেন, ‘ঈদ হচ্ছে আনন্দ আর ত্যাগের। ঈদ আনন্দটা আরও বেড়ে যায় যখন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আসি। এখানে আবহাওয়া অনেক ভালো। কখনও রোদ, কখনও বৃষ্টি; তখন আনন্দের মাত্রাটা আরও বেড়ে গেছে।’
সুমাইয়া ইয়াছমিন বলেন, ‘ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য কক্সবাজার ছুটে আসা। খুবই আনন্দ করছি। তবে এতো মানুষ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভিড় করেছে, যার কারণে সমুদ্রও ভালোভাবে উপভোগ করা যাচ্ছে না। রোদ, বৃষ্টির কক্সবাজার খুবই ভালো লাগছে।’
আরও পড়ুন: লাখো পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার, উপেক্ষিত লাল পতাকার নির্দেশনা
এদিকে সাগর উত্তাল। কয়েকটি পয়েন্টে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। আবার রয়েছে উল্টো স্রোতের টান। যার কারণে পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তায় সতর্ক রয়েছে লাইফ গার্ড সংস্থার কর্মীরা।
সি সেফ লাইফ সংস্থার সিনিয়র লাইফ গার্ড কর্মী মোহাম্মদ শুক্কুর বলেন, ‘সৈকতে ৩ স্তরের দায়িত্ব পালন করছে লাইফ গার্ড কর্মীরা। লাইফ গার্ড কর্মীরা টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষক, বালিয়াড়িতে টহল ও বোট নিয়ে পানিতে অবস্থান করছে। কিন্তু পর্যটকদের সচেতন হতে হবে বেশি। তাদেরকে লাইফ গার্ড কর্মীদের নির্দেশনা মানতে হবে, তা না হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরও লাইফ গার্ড কর্মীরা সজাগ রয়েছে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের সহকারী পুলিশ সুপার নিত্যানন্দ দাশ বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভ্রমণকে আনন্দমুখর করতে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি সৈকতের প্রতিটি গোলঘরে পুলিশ অবস্থান করছে। একদিকে মোবাইল টিম অন্যদিকে সাদা পোশাকে পুলিশ সমুদ্র সৈকতে ঘুরছেন।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস ইনতেসার নাফি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে একাধিক মোবাইল টিম পর্যটকদের সব ধরনের হয়রানি রোধে মাঠে কাজ করছে।’
শুধু কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত নয়, আগত পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনিন্দ্য সুন্দর মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি ঝর্ণা, ইনানী ও পাটুয়ারটেকের পাথুরে সৈকত, রামুর বৌদ্ধ বিহার, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, শহরের বার্মিজ মার্কেট, রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড এবং ডুলাহাজার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলো।