রাজস্ব আদায় কোটি টাকা, তবুও নেই ন্যূনতম যাত্রীসেবা

২ সপ্তাহ আগে
প্রতিবছর বরগুনার খেয়াঘাটগুলো থেকে সরকার কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা নেই যাত্রীদের জন্য। সব ঘাটে নেই যাত্রী ছাউনি, যেগুলোতে আছে সংস্কারের অভাবে তারও বেহাল দশা। আবার কোথাও কোথাও দখল হয়েছে যাত্রী ছাউনি। ঘাটে যাত্রীদের জন্য নেই ওয়াশ রুমের ব্যবস্থাও। এতে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। তবে বরগুনার জেলা প্রশাসক জানান, সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সরেজমিনে বরগুনার বড়ইতলা বাইনচটকি খেয়াঘাট ঘুরে দেখা যায়, ১ কোটি সাত লাখ টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে এ খেয়াঘাট। এ ঘাটের বাইনচটকি পাড়ের যাত্রী ছাউনির বেহাল দশা। এক বছর আগে ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গেছে যাত্রী ছাউনি চাল। বড়ইতলা পাড়ের যাত্রী ছাউনিটি হয়েছে বেদখল। এ রুটের যাত্রীদের জন্য নেই আলাদা ঘাট। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফেরিঘাট ব্যবহার করা হয় এখানে। এতে ঝুঁকি নিয়ে ভারী যানবাহনের সাথে ওঠা-নামা করতে হয় যাত্রীদের। একই অবস্থা এক কোটি ৫৩ লাখ টাকায় ইজারা দেয়া আমতলী-পুরাকাটা খেয়া ঘাটেরও।


জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ৫ কোটি ২২ লাখ টাকায় চলতি বছর বরগুনার ১৫টি খেয়াঘাট ইজারা দেয়া হয়েছে। যাত্রীদেরও অভিযোগ, এ খাত থেকে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি রাজস্ব আদায় করলেও যাত্রীদের ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি।


বড়ইতরা খেয়াঘাটে অবস্থানরত সুমন নামের এক যাত্রী বলেন, ‘খেয়াঘাটে বসার মত একটু জায়গা নেই একটু ওয়াশরুমে যাওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টিতে রোদে চায়ের দোকানে গিয়ে বসতে হয়। অথচ আমরা ভাড়া দিয়ে চলাচল করি। আমাদের জন্য ন্যূনতম কোনো সুযোগ সুবিধা নেই।’


পুরাকাটা খেয়াঘাটে ইসমাইল হোসেন রেজা নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ফেরি এবং খেয়ার জন্য একই ঘাট ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে ভারী যানবাহনের সঙ্গে খেয়াঘাটে যাত্রীদের ওঠানামা করতে হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনা ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে ভারী যানবাহন যখন ফেরির গ্যাংওয়েতে ওঠে তখন গ্যাংওয়েতে থাকা যাত্রীরা এবং মোটরসাইকেল নদীতে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে এখানে।’


আরও পড়ুন: একটি ব্রিজের জন্য ৩০ হাজার লোকের ভোগান্তি


গুলবুনিয়া খেয়াঘাটের নারী যাত্রী সুমনা বলেন, ‘এখানে তো যাত্রী ছাউনি নেই। রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অথবা গাছতলায় বসতে হয়। ঝড়বৃষ্টিতে এরকম ভোগান্তি পোহাতে হয়। একটা ওয়াশরুমের ব্যবস্থা নেই। দীর্ঘ সময় এখানে সেখানে সময় কাটাতে হয়। নারীদের জন্য ভোগান্তির শেষ নেই খেয়া ঘাট গুলোতে।’


এ বিষয়ে বরগুনা জেলা যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম টিটু বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে খেয়াঘাটগুলোতে যাত্রী হয়রানির বিষয় নিয়ে আমরা লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু আমাদের এসব অভিযোগ আমলে নেয়া হয়নি। যাত্রীরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে- অথচ সরকার এ খাত থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে। আমাদের দাবি প্রতিটি ঘাটে যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা।’


এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘খেয়াঘাটগুলোতে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে নতুন করে চারটি যাত্রী ছাউনি নির্মাণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। পাশাপাশি যেগুলো বেদখল হয়েছে আর যেগুলোর বেহাল অবস্থা হয়েছে, সেগুলো সংস্কার এবং উদ্ধারের জন্য প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন