সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, রাজশাহীর রাজাবাড়ী এলাকার ছয়ঘাটি থেকে দামকুড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক। গত ২০০১ সালে এলজিইডি সড়কটি পিচ ঢেলে পাকা করেন। এরপর অন্তত চারবার মেরামত করা হয়। গত বছর যোগাযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি শক্তিশালী ও চওড়া করতে প্রকল্প নেয় এলজিইডি। সড়কের দুপাশে ৪ ফুট করে বৃদ্ধি করে ১০ ফুট থেকে ১৮ ফুট চওড়া করার কাজ শুরু হয়। এরইমধ্যে ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে স্থানীয় একজন রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি সড়কের পাশের জমির মালিকানা দাবি করে সেই কাজ আটকে দিয়েছেন। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্প শেষ করা নিয়ে সংশয়ে এলজিইডি।
সম্প্রতি ওই সড়কের পালপুর ও জগিডাং গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ১০০ মিটারের মত সড়কের দু'পাশ চওড়া করতে খোঁড়া হলেও কাজ বন্ধ। ভাঙা চোরা সড়কের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার হাজারো মানুষ।
আরও পড়ুন: দুর্ভোগের আরেক নাম বেনাপোল-বাহাদুরপুর সড়ক
গ্রামবাসীরা জানান, সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এ সড়ক দিয়ে আনা নেয়া করা হয় বিভিন্ন ধরনের পন্য। শুরু ও শেষ দিকের বেশিরভাগ কাজ হলেও মাঝে অল্প কাজ না হওয়ায় তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। ভাঙাচোরা জায়গাটিতে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।
এদিকে সড়কটির দুপাশে রয়েছে বনবিভাগের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সড়ক চওড়া করতে ৬১৭টি আম, জাম, নিম ও রেইনট্রি কড়ই গাছ কাটার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বনবিভাগে আবেদন করে এলজিইডি। গাছ কাটার অনুমতি পাওয়ার পর মুল্য নির্ধারনের পক্রিয়া চলছে। সেটি শেষ হলে হবে টেন্ডার।
এলজিইডির গোদাগাড়ী উপজেলার প্রকৌশলী মুনছুর রহমান বলেন, এক বছর মেয়াদি প্রকল্প খুব ভালোভাবেই চলছে। আগামী মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। কাজের গুনগত মানও খুবই ভালো। সম্প্রতি পালপুর ও জগিডাং এলাকায় জমির মালিকানা দাবি করে একজন ব্যক্তি সড়কের পাশের বেশ কয়েকটি গাছ কেটে নেয়। এরপর মুল সড়কের পাশে চওড়া করার জন্য খনন করা জায়গা ভেঙে দেয়। সেই থেকে কাজ বন্ধ।
মুনছুর রহমানের ভাষ্য, ওই ব্যক্তির সাথে এলজিইডির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও তিনি তার দাবির পক্ষে কোন নথি উপস্থাপন করেননি। এবং ক্রমাগত অসহযোগিতা করছে।
আরও পড়ুন: গাড়ি থামিয়ে ইজারাদারদের টানাটানি, বিপাকে পশু বিক্রেতারা
মুনছুর রহমান জানান, ১৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক শক্তিশালী ও প্রশস্তকরণ প্রকল্প ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণের কোন টাকা ধরা নেই। সাধারণত এলজিইডি জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই উন্নয়ন কাজ করে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষ সবধরনের সহযোগিতা করেন।
এলজিইডির গোদাগাড়ী উপজেলার প্রকৌশলী মুনছুর রহমান সড়কের উন্নয়ন কাজে বাঁধা দেয়া ও গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছেন। তবে এই প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাজে বাঁধা দেয়া ওই প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির পরিচয় জানাতে চাননি।
এক্ষেত্রে মুনছুর রহমান বলেন, কাজ শেষের দিকে। যে ব্যক্তি বাঁধা দিয়েছেন, তিনি সহযোগিতা করলে দ্রুতই কাজ শেষ হবে। সড়কের দুধারে যে গাছ কাটতে হবে, সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্রুতই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে।