রাজশাহীতে রেলপথ অবরোধ, সারাদেশের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ

৩ সপ্তাহ আগে
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও স্টেশন সংস্কারের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে স্থানীয়রা। এতে রাজশাহী থেকে খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ও ঢাকাগামী মধুমতী, বনলতা ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বুধবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আন্দোলনকারীরা নন্দনগাছী স্টেশনের দুই পাশে লাল নিশান টানিয়ে রেল চলাচল বন্ধ করে দেন। এরপর তারা স্টেশনের সামনে অবস্থান নিয়ে নানা দাবি-দাওয়া সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।


রেল অবরোধে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদ শেষে কর্মস্থলমুখী যাত্রীরা।


নাইম নামে এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দাবি আদায় মানেই সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা নয়। এই যে ভোগান্তি শুরু হলো, শেষ কোথায়, তা কেউ জানে না।’


পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই অবরোধে ট্রেনের সময়সূচিতে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।


আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি, নন্দনগাছী স্টেশনে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি নিশ্চিত করতে হবে এবং স্টেশনটির জরুরি সংস্কার করতে হবে।


স্থানীয় বাসিন্দা মোজাম্মেল বলেন, ‘চারঘাট, বাঘা ও পুঠিয়ার মানুষ নন্দনগাছী স্টেশন ব্যবহার করলে অনেক সুবিধা হবে। সড়কে যানজট বাড়ছে, রেলই ভরসা। কিন্তু যাত্রাবিরতি না থাকায় মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে।’


আরও পড়ুন: নরসিংদীতে মিষ্টি আর ফুল বিতরণে তিন ট্রেনের যাত্রাবিরতি উদ্বোধন


১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত নন্দনগাছী স্টেশনটি ২০১৫ সালের শেষ দিকে কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। এক সময় এখানে ১২ জন জনবল থাকলেও বর্তমানে একজনমাত্র পোর্টারম্যান কর্মরত। শুধুমাত্র দুটি লোকাল ট্রেন এখানে থামে। প্ল্যাটফর্মে ছাউনি থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্টেশনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।


সাগরদাঁড়ি ট্রেনের গার্ড মজিবুদ দৌল্লা বলেন, ‘ট্রেন ছাড়ার আগে আন্দোলনের বিষয়টি জানা ছিল না। এখন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’


ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছেন।’


তবে পশ্চিমাঞ্চল রেলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জেনারেল ম্যানেজারসহ (জিএম) ঊর্ধ্বতনরা ছুটিতে রয়েছেন। আলোচনার মতো কেউই দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। ফলে সমাধান পেতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।’


এর আগে গত ১ মে একই দাবিতে হাজারো মানুষ আন্তঃনগর ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন। ওই সময় বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও লোকাল মেল ট্রেনও বন্ধ হয়ে পড়ে।


নন্দনগাছী স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেন যাত্রাবিরতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান আন্দোলন স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। দ্রুত সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন