রাজধানীতে এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন

১ সপ্তাহে আগে
এখনও লক্কড়-ঝক্কড় পরিবহনের দখলে রাজধানীর সড়ক। সরকার ছয় মাস সময় বেঁধে দিলেও আসেনি ইতিবাচক পরিবর্তন। এর জন্য মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে দায়ী করছেন নগর পরিকল্পনাবিদ।

ঢাকার রাস্তায় বের হলেই দেখা যায়, কালো ধোঁয়ায় সড়ক অন্ধকার করে ছুটে চলছে বহু বাস। অনেকগুলোরই সিগনাল লাইট নষ্ট, ভাঙা গ্লাস আর চাকার অবস্থাও নাজুক। মরিচায় আচ্ছাদিত জোড়াতালি দেয়া বডিও খসে পড়ার উপক্রম। এমন লক্কড়-ঝক্কড় পরিবহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজধানীর প্রতিটি সড়কে।

 

অথচ রাজধানীতে চলতি মাস থেকে গণপরিবহনের এমন চিত্র আর দেখার কথা ছিল না। গেল বছরের অক্টোবরে ৬ মাস সময় বেঁধে দিয়ে ফিটনেসবিহীন এসব যানবাহন বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার। বাস্তবতা হলো, সরকারি ঘোষণা তোয়াক্কা না করেই সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন। সেবার মানেও কোনো পরিবর্তন না আসার অভিযোগ যাত্রীদের।

 

যাত্রীরা বলছেন, বেশির ভাগই বাসেরই গ্রাস ভাঙা থাকে। বৃষ্টির কারণে বসা যায় না। এছাড়া ফ্যানগুলোও নষ্ট থাকে। গরমে খুব অস্থির লাগে।

 

এদিকে কোনোরকম জোড়াতালি আর নামমাত্র রঙ দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছন বাস মালিকদের কেউ কেউ। ওয়ার্কশপে কর্মরত শ্রমিকরা জানান, দৃশ্যত পরিবর্তন হলেও কার্যত কোনো সমাধান হয় না।

 

আরও পড়ুন: মেঘনায় ডেঞ্জার জোন, অবৈধ নৌযান সিন্ডিকেটের দায় নেবে কে?

 

ফিটনেসবিহীন গাড়ির অবস্থা যেমনই হোক তা নিয়ে যেন কোনো মাথাব্যথা নেই মালিকদের। কাগজে-কলমে বৈধতা আছে জানিয়েই দায় সারছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ মো. সাইফুল আলম।

 

সময় সংবাদকে তিনি বলেন, 

মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি থাকলেও আমাদের জানা মতে সেটা খুব একটা বেশি নয়। অনেব বাস আছে, যেগুলোকে মেইনটেনেন্সের কারণে আনফিট মনে হবে। কিন্তু সেগুলোর ফিটনেস আছে।  

 

নতুন বাস নামোনোর আগে পুরনোগুলোর আপসারণের উদ্যোগ কাজে আসবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

 

মহাসচিব বলেন, ‘একটি রোড থেকে একটি বাস উচ্ছেদ করতে চাইলে এর বিপরীতে আরেকটি বাস নামাতে হবে। নতুন বাস নামানোর কোনো পরিকল্পনা না নিয়ে শুধু উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যাবে না।’

 

এমন দুর্দশার জন্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোকে দায়ী করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। পরিবেশবান্ধব আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিতের পরামর্শ তাদের।

 

আরও পড়ুন: ঢাকার এক্সপ্রেসওয়েগুলোতে কেন বাড়ছে দুর্ঘটনা, কী পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

 

এ বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, ‘একটা গোষ্ঠির কাছে নগর পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ কুক্ষিগত। তারা ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তা থেকে সরাবে না।’  

 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীনের দাবি, মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন অপসারণ এরইমধ্যে শুরু হয়েছে অভিযান।

 

বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, 

সব মালিকই সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার তো কোনো সুযোগ নেই। ডিউটি পালন করার সময় এ ধরনের গাড়ি যাদের নজরে পড়বে, তারা সেগুলো ডাম্পিংয়ে পাঠিয়ে দেবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই।  

 

এত এত সিদ্ধান্ত আর একের পর এক প্রকল্প পরিকল্পনার পরও অমীমাংসিত যাত্রী সেবার মান। নগরবাসীর প্রশ্ন, গণপরিবহনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে কবে?

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন