রংপুরে ৩৮ কোটি টাকায় নির্মিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সের বেহাল দশা

৩ সপ্তাহ আগে
নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার দুই বছর পার হলেও রংপুর বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স পড়ে আছে অবহেলায়। দীর্ঘ সময়ে নিয়োগ দেয়া হয়নি জনবল। সাজানো-গোছানো জিমের দামি সরঞ্জামে পড়েছে ধুলার আস্তরণ। যত্রতত্র পড়েছে শ্যাওলা, ভবনে ধরেছে ফাটল।

রংপুর অঞ্চলে খেলাধুলার প্রসারে ২০১৭ সালে ১০ একর জমির ওপর উত্তরে ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয় এর নির্মাণকাজ। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই কমপ্লেক্সে ক্রীড়াবিদদের পা পড়েনি। সময়ের ব্যবধানে এটি পরিণত হয়েছে গোচারণ ভূমিতে। ‎বিশাল খেলার মাঠ, ইনডোর, হোস্টেল, অফিস ও কনফারেন্স রুম থাকলেও নিয়োগ হয়নি কোনো জনবল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভবনগুলো দেখা গেলেও ভেতরে কেবলই শূন্যতা। চাক বেঁধেছে মৌমাছি। ব‍্যবহার না করায় ইনডোর ও জিমনেশিয়ামের কোটি টাকার সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।


কমপ্লেক্স এলাকার পাশেই রশিদ মিয়ার বাড়ি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গেটে ধান শুকাচ্ছেন তিনি। রশিদ বলেন, কেউ আসে না, কোনো খেলাধুলা হয় না। এজন্য গেটে ধান শুকাচ্ছি। ভিতরে সাপ, মৌমাছির চাক দিয়ে ভর্তি হয়ে রয়েছে।


‎আরেক বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ৯ বছর পার হতে চলল, এখানে কেউ আসেও নাই, খেলাও হয় নাই। যদিও একদিন একটা ম‍্যাচ দেখছি রংপুর আর লালমনিরহাটের। এছাড়া কোনো দিন এই জায়গায় কোনো খেলা হয় নাই। পরিত্যক্ত অবস্থায় সবকিছু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।


আরও পড়ুন: নেপাল থেকে দেশে ফিরলেন জামালরা


ক্ষোভ জানিয়েছেন ক্রীড়াবিদরা। তারা বলছেন, সরকারের কোটি টাকা খরচ শুধুই অপচয়। ‎সাবেক খেলোয়াড় ও কোচ আরিফা জাহান বীথি বলেন, এখানে অনেক বড় ইনডোর সুবিধা আছে। মেয়েদের থাকার ব‍্যবস্থা আছে। দিন শেষে এত বছর ধরে পড়ে আছে, অবহেলা কেন জানি না। আমার কাছে মনে হয়েছে ওখানে সরকারের পুরো টাকার ক্ষতি হয়েছে। কারণ ওখানে খেলাধুলার সবকিছু ব‍্যবস্থা থাকলেও সুযোগ সুবিধা আর জনবলের অভাবে পুরোটাই ধ্বংসের পথে।


দায়সারা উত্তর দিলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ‎রংপুর বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স কমিটির নতুন সদস্য সচিব সেলোয়ারা বেগম বলেন, কীভাবে আমরা প্রোগ্রাম হাতে নিতে পারি, কীভাবে কাজ করবো সেটার একটি মিটিং হবে। আমরা আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে একটা মিটিং কল করতে পারব। মিটিং কল কীভাবে এই এলাকার মেয়েদের জন‍্য কাজ করা যায় সেটা আমরা হাতে নেব। যদিও পদাধিকার বলে বিভাগীয় কমিশনারে স্ত্রী আহবায়ক। উনি আসলে তার সাথে কথা বলব। এটা অবেলায় পড়ে থাকাটা দুঃখজনক। বিগত বছরগুলোতে কেন এরকম হলো সেগুলো ক্ষতিয়ে দেখা হবে। তবে খুব দ্রুত আমরা মিটিং করে একটা সিদ্ধান্ত নেব।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন