গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা নজিরবিহীন সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতিতে একমত হয় হামাস ও ইসরাইল। গেল বুধবার কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জাসিম আল থানি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই চুক্তি ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকজন বন্দিকে মুক্তি দেয়ার পাশাপাশি গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে।
তিনি বলেন,
আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, গাজায় চলমান যুদ্ধ শেষ করতে কাতার এবং মিশরের যৌথ প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। দু’পক্ষের সম্মতিতে গাজায় চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি বন্দিদের মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে, গাজায় যুদ্ধবিধ্বস্তদের জন্য মানবিক সাহায্য পাঠানোরও কথা হয়েছে।
চুক্তিটি বাস্তবায়নের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী ডোনাল্ড ট্রাম্প। জিম্মিরা দ্রুত নিজ বাড়িতে ফিরবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরাইল-হামাস দ্বন্দ্বের ইতি টানার ঘোষণা দেন জো বাইডেনও। জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে একজোট হয়ে কাজ করেছেন তারা।
আরও পড়ুন: ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণহানির পর যুদ্ধবিরতি, স্থায়ী হবে কতদিন?
বাইডেন বলেন,
আগামী ছয় সপ্তাহে ইসরাইল দ্বিতীয় ধাপের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করবে, যা এই যুদ্ধকে চিরতরের জন্য শেষ করে দেবে। তবে, পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি দ্বিতীয় ধাপের শর্তাবলি আলোচনায় সময় বেশি লাগে তাহলে যুদ্ধবিরতি চলমান থাকবে।
তবে, চুক্তি কার্যকর হওয়ার আগেই ঘটলো বিপত্তি। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই হামাসের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন ইসরাইলি সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেন্সার। এসময়, হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আখ্যা দিয়ে তাদের এই দাবিতে পরিবর্তন আনার বিষয়ের তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় যখন বিভিন্ন স্থানে উদযাপন চলছে, ঠিক তখনও গাজায় নির্বিচার হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। গেল একদিনে উপত্যকাটিতে বহু নিরীহ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ বাহিনীর প্রশংসা খামেনির
এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি আদৌ কতটুকু কার্যকর হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বিশ্বমহলে। লাখো মানুষকে আশার আলো দেখানো এই চুক্তি কি আবারও রূপ নেবে ব্যর্থতায়? প্রশ্ন বিশ্ববাসীর।
]]>