যশোরে ১৩ পরিবারে অগ্নিসংযোগ: পরিদর্শনে ঢাকার প্রতিনিধি দল

১ সপ্তাহে আগে
যশোরের অভয়নগরে দুবৃর্ত্তদের দেওয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর পরিদর্শন করেছেন ঢাকার একটি নাগরিক প্রতিনিধিদল। মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আক্রান্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেন। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পোড়া বাড়িঘর পরিদর্শন ও ঘটনার দিনের বর্ণনা শুনেন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।

 এছাড়া প্রতিনিধিদল হত্যাকাণ্ডের শিকার কৃষকদল নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িঘরও পরিদর্শন করেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, নারী ঐক্য পরিষদের সভানেত্রী সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য, মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি দীপক শীল, অধিকার কর্মী এবং আইপিনিউজ এর নির্বাহী সম্পাদক সতেজ চাকমা। প্রতিনিধি দল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিফ্রিং করেন।


নারী ঐক্য পরিষদের সভানেত্রী সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশের বিগত ৫৩ বছরে ক্ষমতাবান জনগোষ্ঠী সবসময় সংখ্যালঘুদের টার্গেট করেছে। তবে এ ঘটনা সাম্প্রদায়িক না হলেও আমরা আশা করবো আক্রান্ত পরিবারগুলোর নিরাপত্তা, বিচার ও যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানে প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।’


নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখলাম যাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তারা এখন সর্বশান্ত। আমাদের পর্যবেক্ষণে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি আমরা লক্ষ্য করলাম সে পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা তারা পাচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে এবং ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে সেটা খুবই নগণ্য৷ আমরা আশা করি প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন৷’

আরও পড়ুন: শার্শা সীমান্তে পিস্তলসহ দুই অস্ত্র পাচারকারী গ্রেফতার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে এ হত্যাকাণ্ড ক্ষমতা ও আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্ব নিয়ে। তবে এ হত্যাকাণ্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য নিরীহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর অগ্নিসংযোগ ও বাড়িঘরে লুটপাট চালানো হয়েছে। দুটি ঘটনায় যারা সত্যিকারের আসামি তাদের ধরতে হবে। এ ঘটনায় যাদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে, তারা নিরীহ। আগুনে মানুষের স্বপ্ন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে বসাবসের মানসিক জোস সেটা হারিয়ে ফেলেছেন তারা। তারা আতংকের মধ্যে রয়েছেন। আমরা দেখলাম, হত্যা মামলায় যাদের নাম এজাহারে দেওয়া হয়েছে, তারা এ ঘটনায় সঙ্গে জড়িত না। আইনের ফাঁক দিয়ে অপরাধী বেরিয়ে যাক সেটা যত না খারাপ, তত খারাপ যখন একজন নিরপরাধী মানুষ শাস্তি পায়।’


প্রসঙ্গত, গেল ২২ মে বৃহস্পতিবার রাতে যশোরের অভয়নগর ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের মতুয়া ধর্মাবলম্বী পিন্টু বিশ্বাসের বড়িতে উপজেলার পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলামকে কুপিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘেরের ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে ডেকে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয় অভিযোগ স্বজনদের। এ ঘটনার পর ওই রাতে সংক্ষুব্ধ একদল লোক পিল্টু বিশ্বাস ও তার পাশের ১৩টি পরিবারের ১৮টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি আগুন দেওয়ার আগে লুটপাট, ভাঙচুর ও মারধর করা হয়। 

এ ঘটনায় নিহতের পরিবার ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা পৃথক দুটি মামলা করেছেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন