ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় গুলশান লেক, উদাসীন কর্তৃপক্ষ

১০ ঘন্টা আগে
গুলশান লেক এখন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। পুরো লেক বয়ে বেড়াচ্ছে নোংরা আর দূষিত পানি। এই এলাকার বাসিন্দারা তো বটেই, অফিসগামীদের জীবনও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে এই দূষণের জন্য। নগরবাসীর অভিযোগ, সিটি করপোরেশনে বারবার ধরনা দিয়েও মিলছে না প্রতিকার। নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে খাল পরিষ্কার কার্যক্রমে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও গুলশান লেকের জন্য নির্দিষ্ট কোনো বাজেট রাখা হয়নি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার গুলশান লেক। তবে নেই গুলশানের আভিজাত্যের ছিটেফোঁটাও। সুউচ্চ অট্টালিকার পাশেই লেকের বেহাল দশা। যেন প্রদীপের নিচে অন্ধকার।

 

বাতাসে ভাসছে পচা পানির দুর্গন্ধ। ওয়াকওয়ের পাশ ঘেঁষে উঁকি দেয়া ময়লা-আবর্জনা চলে যাচ্ছে লেকের পেটে। হাঁটার পথজুড়েই যেন ময়লার ক্যানভাস। নগরবাসী বলছেন, বিকেলের মুক্ত বাতাস, সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটাহাঁটি কিংবা একটু নির্জনতা; এখন কিছুই মিলছে না গুলশান লেকে। অনেক দুর্গন্ধ। চলাচলের সময় নাক বন্ধ রাখতে হয়।

 

পচা পানি ও ময়লা আবর্জনায় গুলশান লেক এখন মশার প্রজননক্ষেত্র। নেই নিয়মিত ময়লা পরিষ্কারের উদ্যোগ, ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নড়বড়ে। নগরভবনে বারবার ধরনা দিয়েও প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ নগরবাসীর। তারা বলেন, লেকের এই অবস্থায় চলাচল করতে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। মাছও হচ্ছে না লেকে।

 

আরও পড়ুন: পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশে গুলশান লেক ভরাট কার্যক্রম বন্ধ

 

এভাবে চলতে থাকলে একদিন লেকের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গুলশান সোসাইটির সহ সভাপতি ইসরাত জাহান বলেন, বিভিন্ন ভবনের সুয়ারেজ কানেকশন সরাসরি লেকের সঙ্গে রয়েছে। যার কারণে লেকের পানি পরিষ্কার হচ্ছে না। রাজউক, সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করলে সমস্যার সমাধান সম্ভব।

 

ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে হবে। পাশাপাশি লেক যাতে দূষণমুক্ত থাকে সেজন্য দেখভাল করতে হবে। দায়িত্ব রয়েছে রাজউকেরও।

 

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের খাল পরিষ্কার কার্যক্রমে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। যদিও গুলশান লেক পরিষ্কারে নির্দিষ্ট কোনো বাজেট রাখা হয়নি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, সকাল ৮টার মধ্যে পুরো সিটি করপোরেশন এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। তবে দুপুর ১২টার মধ্যে আবারও ময়লা-আবর্জনা জমে যায়। সিটি করপোরেশন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তবে মানুষকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে।

 

আবর্জনায় ঢাকা এই জলাশয় শহরের হৃদয়ে যেন বিষ ঢেলে দিচ্ছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, এই শহর কী সত্যিই বাসযোগ্য আছে? নাকি অভ্যস্ত হয়ে পথচলা নিত্যদিন?

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন