মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে কাপ্তাইয়ে বেড়েছে ৭ প্রজাতির মাছ, জেলেদের দাবি কমেছে

১ সপ্তাহে আগে
কাপ্তাই হ্রদ, একসময় দেশের কার্প জাতীয় মাছের অন্যতম ক্ষেত্র ছিল এই জলাধার। সময়ের সাথে কমেছে উৎপাদন। সাথে মাছের প্রজাতি কমে গেছে বলে দাবি জেলেদের। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) এর গবেষণা প্রতিবেদন বলছে ভিন্ন কথা। পূর্বের প্রজাতির সাথে নতুন আরো ৭ প্রজাতির মাছ হ্রদে পাওয়া গেছে বলে দাবি প্রতিষ্ঠানটির।

৭২৫ বর্গ কিলোমিটারের বিশাল জালাধার কাপ্তাই হ্রদ। যা দেশের মিঠা পানির মাছের অন্যতম উৎস। এক সময়ে কার্পজাতীয় মাছের ভান্ডার খ্যাত এই হ্রদ হরাতে বসেছে সেই জৌলুস। জালে আগের মত ধরা পড়ছেনা কার্প জাতীয় মাছ। ছোট বড় মিলিয়ে ১৫- ২০ প্রজাতির মাছের দেখা মিলেছে বাজারে।

 

এমন বাস্তবতায় কাপ্তাই হ্রদের মাছের প্রজাতি নিয়ে দীর্ঘ চার বছর ধরে চলা গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিএফআরআই। সেখানে দেখা যাচ্ছে হ্রদের বেড়েছে মাছের প্রজাতি। তবে ভিন্ন কথা বলছেন জেলে ও ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি হ্রদ থেকে হারিয়ে গেছে সরপুটি, সাদা ঘনিয়া, পোয়া, ফাইশ্যাসহ কয়েক প্রজাতির মাছ।

 

জেলে আনোযার হোসেন বলেন, আগে জালে প্রচুর কার্পজাতীয় মাছ পেতাম। এখন তা স্বপ্ন বলে মনে হয়। রুই, কাতল, বোয়াল, চিতল আইড়সহ হরেক রকম মাছ আসতো এখন তেমনটা চোখে পড়ে না। হ্রদে মাছ বলতে কাচকি চাপিলা, মলামাছ বেশি পাওয়া যায়। ফলে আগে মারমার মত যারা বড় মাছ ধরতেন তারা এখন কাচকি জাল দিয়ে মাছ ধরেন।  কারণ সারাদিন বড় মাছ ধরলে ২০/২৫ কেজি মাছ পেতে কষ্ট হয়।

 

আরও পড়ুন: জীবিকার তাগিদে অসুস্থতা নিয়েও মাছ ধরতে যান শ্রীকৃষ্ণ, হঠাৎ নিখোঁজ

 

খুচরা ব্যবসায়ী হৃদয় মিয়া বলেন, এখন আমরা সব মিলিয়ে ২০/২৫ প্রজাতির মাছ বিক্রয় করি। যার মধ্যে কিছু মাছ পরিমাণে বেশি, কিছু মাছের পরিমান ৫/১০ কেজির মত হয়ে থাকে। আগের সেই দিন নেই বললেই চলে।

 

এমন হতাশার মাঝে আশার আলো দেখছে বিএফআরআই।

 

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট রাঙ্গামাটি শাখার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক হায়দার বলেন, আগে হ্রদে ৭৯ প্রজাতির মাছ পাওযা যেতো। আমারা দীর্ঘ চার বছর এই হ্রদের মাছের প্রজাতি নিয়ে গবেষণা করেছি। এখানে নতুন আরো ৭ প্রজাতির মাছের সন্ধান পেয়েছি। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে মোট ৮৬ প্রজাতির মাছ রয়েছে।

 

তাছাড়া হ্রদের পানির গুণগত মান, মাছের প্রাকৃতিক খাবারে মজুদ খুবই সন্তোষজনক। আমি হালদা নদীর গবেষণার কাজ করেছি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলেতে পাড়ব পানির গুণগত মান, প্রাকৃতিক খাবারে দিক থেকে  হালদার পরেই কাপ্তাই হ্রদের অবস্থান হবে।

 

আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় মাছের ঘেরেই সবজি চাষ, দ্বিগুণ আয়ে কৃষকের মুখে হাসি

 

তিনি আরো বলেন, হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের উৎপাদন বাড়াতে কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা গেলে এই হ্রদ তার পুরোন জৌলুস ফিরে পাবে। যার মধ্যে রয়েছে হ্রদে জালের ব্যবহার নিয়ন্ত্রন। ক্রিক প্যান পদ্ধতিতে  মাছ চাষ, চিহ্নিত প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্রগুলোকে ড্রেজিংসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।


ষাটের দশকে প্রমত্তা কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে সৃষ্টি করা হয় এই কৃত্তিম হ্রদ। যেখানে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ২৬ হাজার জেলে।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন