প্রকৃতির এক অপূর্ব বৈচিত্র্যময় নিদর্শন মৌলভীবাজার জেলা। যেদিকে চোখ যাবে শুধু পাহাড়-টিলা অরণ্যে ঘেরা গাঢ় সবুজ নির্জনতার হাতছানি। বিধাতা যেন নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন এসব সৌন্দর্যকে।
আর প্রকৃতির এসব মোহময় সৌন্দর্যের রূপ-লাবণ্য উপভোগ করতেই সাড়া বছর লেগেই থাকে কমবেশি পর্যটকদের আনাগোনা। তবে এবারের ঈদুল আজহার লম্বা ছুটিতে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের উপস্থিতিতে বিগত একযুগের সব রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। হাজারো পর্যটকের ঢল নামে জেলার প্রতিটি পর্যটককেন্দ্রে।
টানা ১০ দিনের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলের একাত্তরের বধ্যভূমি, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, হামহাম ঝরনা, বড়লেখা মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, ভাড়াউড়া চা বাগান, রাবার বাগান, বিটিআরআই ও তার আশপাশসহ জেলার সবকটি স্থানেই ছিল মানুষের সরব উপস্থিতি। প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে সবাই মুগ্ধ। তবে প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে অনেককে আবার তারকাখচিত পাঁচতারা হোটেলগুলোর সুইমিংপুলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীর জুড়াতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব ধরনের ব্যবসায়ীর ব্যস্ততাও ছিল ব্যাপক।
আরও পড়ুন: মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৩ জনকে পুশইন
লেমন গার্ডেন রিসোর্টের নির্বাহী পরিচালক এম কে শাহীন সুলতান জানান, মৌলভীবাজারে দীর্ঘদিন ধরে পর্যটনে দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন নেই। এদিকে সরকারের জোরালো নজর দেয়ার প্রয়োজন। তিনি গত ঈদে তাদের ভালো ব্যবসার দাবি করেন।
পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তরুণ উদ্যোক্তা এসকে দাশ সুমনের দাবি, এ জেলার পর্যটন বিকাশে এখনই সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে।
এদিকে পর্যটকরা যাতে নিবিঘ্নে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, এর জন্য এবার কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে জানালেন শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী।
হোটল অ্যান্ড রিসোর্ট অনার অ্যাসোসিয়েশনের শ্রীমঙ্গল উপজলার সভাপতি মো. সেলিম মিয়ার দাবি, রাস্তাঘাট উন্নয়নের পাশাপাশি শমশরেনগর বিমান বন্দর চালুর।
আরও পড়ুন: ফাটল-ধসে বিপর্যস্ত মাধবকুণ্ড, ঝুঁকি বাড়ছে পর্যটক চলাচলে
শ্রীমঙ্গল উপজলো নির্বাহী কমকর্তা ইসলাম উদ্দিন জানালেন, কিছু অসঙ্গতি দূর করতে জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছ।
তবে কিছু অব্যবস্থাপনায় অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন একাধিক পর্যটক। ঢাকা থেকে আসা সাগর, সুস্মিতা জানালেন, দেশের অত্যন্ত আকর্ষণীয় এসব স্থানে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা। বিশেষ করে চিপস খেয়ে পলিথিন ফেলা হচ্ছে অবাধে। এছাড়া অনেক স্পটে নেই কোনো ওয়াশরুম। এগুলো সঠিকভাবে খেয়াল নিলে এ জেলার পর্যটনকেন্দ্র সবই অনন্য। পর্যটনসেবা সংস্থার দেয়া তথ্যমতে, মৌলভীবাজারে দেড় শতাধিক হোটল মোটেল গেস্ট হাউস ও রিসোর্ট রয়েছে।