গেল ২৫ জুন রাত ৯ টা। গাংনী থানা থেকে ধানখোলা গ্রামের সড়কে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে কয়েকটি মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে ডাকাত দলের সদস্যরা। লুটে নেয় নগদ অর্থ। পরে ককটেল ফাটিয়ে নিরাপদে পালিয়ে যায় তারা।
গাংনী থানা থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরত্বে এমন ঘটনা আতঙ্কিত করেছে ধানখোলা গ্রামসহ আশপাশের মানুষকে। শুধু এ সড়কেই নয়, গেল ৬ মাসে কয়েক মেহেরপুরে ২১টি বোমা পাওয়া গেছে। এছাড়াও সড়ক, ব্যাংক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি। ফলে আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন: বেকারি পণ্যে অস্বাস্থ্যকর কেমিকেল, মেহেরপুরে জরিমানা
ধানখোলা গ্রামবাসী জানান, এখন আর আগের মতো রাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করা যায় না। শহর থেকে সন্ধ্যার আগেই কাজ সেরে বাড়ি ফেরেন তারা। রাতের বেলায় রাস্তাঘাট অনেকটা সুনসান হয়ে থাকে।
ছিনতাইয়ের কবলেপড়া ভুক্তভোগীরা জানান, ইতিমধ্যে বেশ কিছু সম্পদ হারিয়েছেন তারা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে এখনও আইনের আওতায় আনতে পারেনি প্রশাসন। এভাবে চলতে থাকলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিকৃত হবেন বলেও আশঙ্কা তাদের।
বোমা আতঙ্ক থেকে বাদ যায়নি রাজনৈতিক কার্যালয়ও। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদার দাবিতে হুমকি সম্বলিত চিরকুট ও কাফনের কাপড় দেয়া হয়েছে। এতে আতঙ্কিত রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইতিমধ্যে চাঁদার দাবিতে বোমা ও চিরকুটসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। অনেকেই রাতে দ্রুত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়ি যাচ্ছেন।
রাজনীতিবিদরা বলছেন, বিগত সময়ের পরাজিত শক্তি পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করতে এ ধরনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার। এভাবে চলতে থাকলে অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হবে এমনই উদ্বেগ সমাজের ব্যক্তিদের।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও ১৮ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
মেহেরপুর জেলা সুশাসনের জন্য নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, এভাবে চলতে থাকলে হত্যা রাহাজানিসহ নানা অপরাধের প্রবণতা বাড়বে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অন্যরাও এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়বে। ফলে বৃহৎ সামাজিক ব্যাধি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এ সমস্যার সমাধানে তৎপর রয়েছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন।
মেহেরপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেল আব্দুল করিম বলেন, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে অ্যারেস্ট করা হয়েছে, ফলে গত দুই মাস এ ধরনের কার্যক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সঠিক রাখতে পুলিশ প্রশাসন সর্বদা সজাগ রয়েছে।
জেলা পুলিশের তথ্য মতে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে মেহেরপুরে চুরি ৫১, ডাকাতি ১২ এবং খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৩টি।