মেহেরপুরে পেঁয়াজ প্রণোদনার বীজ বিতরণে চরম অনিয়ম

৩ সপ্তাহ আগে
মেহেরপুরে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণে চরম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত সময় জুনের মধ্যে বীজ দেওয়ার কথা থাকলেও তা কৃষকের হাতে পৌঁছেছে আগস্টের শেষে, ফলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে উৎপাদন নিয়ে। এ নিয়ে তথ্য জানতে গেলে কৃষি কর্মকর্তার আচরণে লাঞ্ছিত হন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদ বাড়াতে কৃষি মন্ত্রণালয় ১০ হাজার কৃষকের জন্য ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দে বীজ ও চাষাবাদ উপকরণ সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয়। নির্দেশ আসে ২১ এপ্রিল, যেখানে দ্রুত সরাসরি ক্রয়ের অনুমতিও দেয় খামারবাড়ির মহাপরিচালক।


পেঁয়াজ বপনের উপযুক্ত সময় জুন হলেও সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের অবহেলায় আগস্ট মাসের ৪ তারিখে ফেরত যাচ্ছে সেই বীজ। ফলে কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। জানা গেছে, সরবরাহ করা বীজের অঙ্কুরোদগম সক্ষমতা ছিল মাত্র ৬১ ও ৬৬ শতাংশ, যেখানে সরকারের নির্ধারিত মান ছিল ৮৫ শতাংশ। এজন্য সদর ও মুজিবনগর উপজেলা কৃষি বিভাগ অনেক বীজ ফেরত পাঠিয়েছে।


বীজ ক্রয়, মূল্যায়ন ও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য গঠিত দুইটি কমিটির সদস্যদের বক্তব্য অনুযায়ী, কোনো সভা হয়নি, এমনকি সিদ্ধান্তের বিষয়েও তাদের কিছু জানানো হয়নি। সদর উপজেলা পিআইও সাইদুর রহমান, মৎস্য কর্মকর্তা ফাতেমা কামরুন্নাহার আখি, পল্লী উন্নয়ন অফিসার রাকিবুল ইসলাম, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন সকলেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন।


একই অভিযোগ করেন জেলা কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জাহান আল মাহমুদ। তিনি বলেন, 'কমিটির সদস্য হয়েছি শুনেছি, কিন্তু কোনো সভা হয়নি, কেউ কিছু জানায়নি।'


আরও পড়ুন: মেহেরপুরে পিপিআর লঙ্ঘন করে বরাদ্দ, বীজ পরিবহনে অবৈধ ছাড়


সদর ও গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, 'জেলা থেকে পরামর্শ অনুযায়ী এক কোম্পানিকে বীজ সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।' তবে কীভাবে এবং কোন মূল্যায়নের ভিত্তিতে বীজ নির্বাচিত হলো সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি।


অন্যদিকে মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিসার ছুটিতে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুল আলম বলেন, 'এই বিষয়টি উপজেলা কৃষি অফিসারদের অধীনে, আমি হস্তক্ষেপ করিনি।'


বীজ বিতরণে অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে সদর উপজেলা কৃষি অফিসে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান কোনো কথা না বলেই অফিস ত্যাগ করেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন