মেসির ১০ নম্বর জার্সি নেয়া উচিৎ হয়নি আনসু ফাতির: শাভি মার্তিন

লিওনেল মেসির বেড়ে ওঠা বার্সেলোনাতেই, ফুটবল ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময়টা তিনি সেখানেই কাটিয়েছেন। শুরুতেই অবশ্য ১০ নম্বর জার্সিটি তিনি পাননি, তার জন্য বেশ সময় লেগেছে তার। তবে আনসু ফাতির ক্ষেত্রে ঠিক তেমনটা নয়, মেসি ক্লাব ছাড়ার পর অল্প বয়সেই তার গায়ে ওঠে নাম্বার টেন জার্সি। শুরুটা দারুণ করেছিলেন, তবে এরপরেই পথ হারিয়ে ফেলেন আনসু ফাতি।

লিওনেল মেসি যখন ১০ নম্বর জার্সি গায়ে জড়ালেন, তখন মনে হলো এই জার্সিটি হয়তো শুধু মেসির জন্যই। নাম্বার টেন কীভাবে সম্মান করতে হয়, কীভাবে এই সংখ্যাটার মর্যাদা রক্ষা করতে হয়, তা খুব ভালো করেই জানতেন মেসি। একটা সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ক্লাবটি ছাড়তে মেসিকে। তারপর তরুণ ফরোয়ার্ড আনসু ফাতির গায়ে ওঠে মেসির সেই আইকনিক ১০ নম্বর জার্সি। 

 

অল্প বয়সেই বার্সেলোনার মূল দলে সুযোগ পেয়ে নিজের ঝলক দেখিয়েছেন। আবার সময়ের সঙ্গে চলে গেলেন আড়ালে। চোটের আঘাত আর বাজে ফর্মের কারণে দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। আর এখন তো খেলার সুযোগটাই মেলে না তার। 

 

তরুণ এই ফরোয়ার্ডের এই অবস্থা কেন? তার অবশ্য একটা কারণ খুঁজে পেয়েছেন বার্সেলোনার একাডেমির সাবেক পরিচালক শাভি মার্তিন। তার মতে, লিওনেল মেসি ক্লাব ছাড়ার পর তার আইকনিক ১০ নম্বর জার্সি নিয়ে নিজের ওপর বাড়তি চাপ নিয়ে ফেলেছিলেন ফাতি। 

 

আরও পড়ুন: অবশেষে সেই গায়কের সঙ্গে দেখা, যার নামে মেসির নাম রেখেছিলেন তার মা

 

বার্সেলোনার যুব একাডেমি লা মাজিয়ায় বেড়ে ওঠেছেন আনসু ফাতি। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই সুযোগ পান বার্সেলোনার মূল দলে। লা লিগায় বার্সেলোনার সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হওয়ার পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসেও সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোলের রেকর্ড গড়েন তিনি। পরে ফাতির লা লিগার রেকর্ডটি ভেঙে দেন লামিনে ইয়ামাল। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ডটি টিকে আছে এখনও। 

 

বার্সেলোনায় দারুণ শুরুর পর মুদ্রার উল্টা পিঠ দেখতেও সময় লাগেনি ফাতির। চোটের কারণে গত কয়েক মৌসুমে বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন মাঠের বাইরে। এক পর্যায়ে তাকে ধারে পাঠানো হয় ইংলিশ ক্লাব ব্রাইটনে। এই মৌসুমে বার্সেলোনায় ফিরলেও একাধিকবার চোটে ছিটকে গেছেন তিনি। 

 

একটা সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধে বার্সেলোনা ছাড়েন লিওনেল মেসি। তিনি পিএসজিতে যাওয়ার পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তার ১০ নম্বর জার্সি ওঠে ফাতির গায়ে। ২০১৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত লা মাজিয়ার পরিচালকের পদে থাকা শাভি মার্তিন সম্প্রতি স্প্যানিশ ক্রীড়া সংবাদপত্র দিয়ারিও স্পোর্তকে বলেন, ওই সময়ে দায়িত্বে থাকলে ফাতিকে আইকনিক জার্সিটি নিতে মানা করতেন তিনি।   

 

আরও পড়ুন: জাতীয় দলের কারো সঙ্গে দ্বন্দ্ব নেই: ফাহমেদুল

 

শাভি মার্তিন বলেন, ‘সে অসাধারণ মানুষ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, তার ১০ নম্বর জার্সি নেওয়া উচিত হয়নি। আমি যদি ওই মুহূর্তে লা মাজিয়ায় থাকতাম, তাহলে তাকে বলতাম, আনসু, এখন এটার সময় নয়। যদি কখনও সঠিক সময় আসে, তখন এটা হবে। কারণ নিজের প্রতি তার প্রত্যাশা ছিল অনেক। আমার মনে হয়, সে তার ওপর বেশি চাপ নিয়ে ফেলেছিল।’ 

 

শাভি মার্তিন একটি ঘটনার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘কাম্প ন্যুতে তার অভিষেকের পরের দিন যখন সে লা মাজিয়ায় এলো, তখন আমি ও ক্লাইভার্ট সেখানে ছিলাম। আমি তাকে বললাম, আনসু তুমি দেরি করেছো, ক্লাসের জন্য দেরি করে এসেছো। তখন সে আমাকে বলল, মেট্রোয় লোকেরা আমাকে থামিয়েছিল, জানি না কেন। আমি বললাম, তুমি কি সত্যিই জানো না? আমি স্পোর্তের প্রচ্ছদটি তুলে ধরে বললাম, এটা এই কারণে। এটা তোমার ছবি ম্যান, তুমি আর মেট্রোয় চড়তে পারবে না।’

]]>