চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দোতলা ভবন নির্মাণের কথা ছিল মেহেরপুর পৌরশহরের উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। গত বছরের আগস্টে সময় পার হলেও নির্মাণাধীন ভবনের ২৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের যত্রতত্র পড়ে রয়েছে নির্মাণসামগ্রী। এরমধ্যেই স্কুলে যাতায়াত, খেলাধুলা করছে শিক্ষার্থীরা। টিনশেড ঘরে কখনও বেঞ্চে আবার কখনও মেঝেতে বসে ক্লাস করছে তারা।
শুধু উত্তরপাড়া নয়, জেলার ১০টি স্কুলে প্রায় একই অবস্থা। নতুন ভবনের কাজ শুরু হলেও শেষ না হওয়ায় এমন ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। পুরাতন ভবনে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে তারা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, এভাবে ক্লাস করতে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারছে না তারা। এছাড়া বিদ্যালয়ে খেলার স্থানগুলো অরক্ষিত হয়ে থাকাই স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাদের।
অভিভাবকরা জানান, সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন তারা। খেলাধুলার মাঝে নির্মাণ সামগ্রীতে আহত হতে পারে তাদের সন্তানরা। এছাড়া ক্লাসে বসার স্থান, টয়লেটসহ আনুসঙ্গিক বিষয়গুলো না থাকায় স্কুলে আসতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে তাদের ছেলে-মেয়েরা।
এ বিষয়ে শিক্ষা বিভাগকে বারবার চিঠি দিয়ে জানানোর কথা বলছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ঠিকাদাররা বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করছে বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। ভবনের অভাবে পাঠদানে হিমশিম খাচ্ছেন বলেও জানান তারা।
আরও পড়ুন: স্নাতক পাসের আগেই কী করে প্রথম শ্রেণির চাকরি পেলেন রাবি শিক্ষার্থী?
গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহীনা বেগম বলেন, ‘বিভিন্ন সময় ঠিকাদারকে জানানো হলে দ্রুত কাজ শুরুর আশ্বাস দিচ্ছেন তারা। অথচ স্কুলে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করছে।’
স্কুলটির সাধারণ শিক্ষক মাহবুব রহমান বলেন, ‘ক্লাসে উপস্থিতির হার কমেছে। সরকারি বিদ্যালয়ের এমন বেহাল দশা হওয়ার কারণে বেসরকারি বিদ্যালয়ে ঝুঁকছে শিক্ষার্থীরা। এতে আর্থিকভাবেও ক্ষতি হচ্ছে তাদের।
একই সুরে কথা বললেন অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও। বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষা বিভাগ বলছে, বিষয়টি নজরে আনতে বিভিন্ন ফোরামে উত্থাপন করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ‘জেলা সমন্বয় সভা, মনিটরিং কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগকে মৌখিক ও লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। নির্মাণাধীন ভবনগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পরিবেশ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
সদর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সাব্বির হোসেন বলেন, ‘বর্ধিত সময়ে কাজ শেষ করতে তাগিদ দেয়া হচ্ছে। আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ করতে চেষ্টা করা হচ্ছে।’
]]>