সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘরের দেওয়ানপাড়ার নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ আবুল হোসেনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
বাবা আবুল হোসেন (৭০) একই এলাকার বাসিন্দা। তিনি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবুল হোসেনের চার মেয়ে ও এক ছেলে। প্রায় চার বছর আগে তার স্ত্রী মারা যান। মেয়েদেরও বিয়ে হয়ে গেছে। তিনি ও ছেলে আহাদ বাড়িতে বসবাস করতেন। আহাদ মাদকাসক্ত হওয়ায় বাবা আবুল হোসেন তার অনেক অন্যায় অত্যাচার সহ্য করতেন। মাদকের টাকা না পেলেই সে বাবাকে মারধর করতো। ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করে ফেলতো।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় জমি নিয়ে বিরোধে ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা, বাবা জখম
গত দুই সপ্তাহ আগে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন ওই বাবা। পুলিশ তদন্তেও এসেছিল। সোমবার সকালে আহাদ তার বাবার কাছে ১৫ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না পেয়ে সে চাকু নিয়ে বাবা আবুল হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে এগিয়ে গেলে তিনি ছুরি কেড়ে নিয়ে তার বুকে ও পেটে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই আহাদ মারা যায়। আহাদ মারা যাওয়ার পর বাবা আবুল হোসেন ছেলের মরদেহের পাশেই বসে ছিলেন। পরে প্রতিবেশীরা পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা এসে আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও আবুল হোসেনের প্রতিবেশী সুমন খান জানান, আবুল হোসেন এলাকায় নিরীহ লোক হিসাবে পরিচিত হলেও ছেলের কারণে তিনি মুখ দেখাতে পারতেন না। প্রায় সময়ই ছেলে তাকে মাদকের টাকার জন্য মারধর করতো। আমরাও তার ছেলেকে মাদক থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু ছেলে কারো কথাই শুনতো না।
আরও পড়ুন: ঋণের চাপে ৪ মাসের সন্তানকে বিষ খাইয়ে মা-বাবার ‘আত্মহত্যা’
আবুল হোসেনের মেয়ে জাহানারা বেগম বলেন, তার ভাইয়ের অত্যাচারে পুরো পরিবার অতিষ্ঠ ছিল। তাকে নারায়ণগঞ্জের একটি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে চার মাস ভর্তি রাখা হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আবার আগের পথে চলে যায়।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান জানান, ঘটনাস্থল থেকে বাবা আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছেলে আহাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।