মুগ ডালের বাম্পার ফলনেও কেন দুশ্চিন্তায় পটুয়াখালীর চাষিরা?

২ সপ্তাহ আগে
পটুয়াখালীতে মুগডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে বিদেশে রফতানি করা হয় এই ডাল। তবে শ্রমিক সংকট ও অতিরিক্ত গরমে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। বিগত বছরের চেয়ে চলতি বছর ডাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা প্রকাশ করে কৃষি বিভাগ জানায়, কৃষকদের কষ্ট হলেও তাড়াতাড়ি ক্ষেত থেকে ডাল তুলতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বিস্তীর্ণ সবুজের ফাঁকে ফাঁকে কালো সোনার হাতছানি। যেদিকে দু-চোখ যায় মাঠের পরে মাঠ এখন শুধু পাকা মুগডাল। উন্নতমানের বীজ, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এ বছর পটুয়াখালীতে মুগডালের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশে ৪৫ শতাংশের বেশি মুগ ডাল পটুয়াখালী জেলায় উৎপাদিত হয়। এই অঞ্চলের মাটি ডাল চাষের জন্য উপযোগী।

 

এখানকার উৎপাদিত মুগডাল জাপান করিয়া সহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়ে থাকে। অনুকূল আবহাওয়া এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ না হওয়ায় একর প্রতি ২ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে। এছাড়া গত বছর প্রতি মণ মুগ ডাল ৩০০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এবার ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

কৃষক এখন ক্ষেত থেকে সকাল-বিকেল সারিবদ্ধভাবে দলবেঁধে ডাল তুলে বস্তায় ভরে বাড়ির উঠানে শুকিয়ে সংরক্ষণ করার পাশাপাশি বাজারজাত করার জন্য প্রস্তুত করছে। তবে চলতি বছর তাপমাত্রা বেশি থাকায় কৃষক ক্ষেত থেকে ডাল ঘরে তুলতে পারছে না। বৃষ্টি হলে খেতেই নষ্ট হবে ডাল এতে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে কৃষকরা।

 

আরও পড়ুন: মুগডাল ভাঙানোর মিল স্থাপনে লাভবান পটুয়াখালীর কৃষকরা

 

তাই কৃষক এই তীব্র গরমের মধ্যেও কষ্ট করে রোদে পুরে খেত থেকে ডাল তুলছেন। টাকা হলেও মিলছে না কোন দিনমজুর, তাই সকাল-বিকেল পরিবার পরিজন নিয়ে মুগডাল খেত থেকে ঘরে তুলছেন তারা।

 

কৃষক মো. আব্দুল জলিল বলেন, দুই বিঘা জমিতে মুগ ডাল চাষ করেছি। আল্লাহর রহমতে ডাল ভালোই হয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে সকাল এবং বিকেল ছাড়া ডাল তোলা যাচ্ছে না। কোন শ্রমিক না পাওয়ায় ডাল উঠাতে হিমশিম খাচ্ছি। জানি না বর্ষা আসার আগে ডাল উঠাতে পারব কিনা।

 

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মুগডাল চাষে আমরা কৃষকদের সকল ধরনের সহযোগিতা করে থাকি। যেহেতু বর্তমানে তাপমাত্রা বেশি সেজন্য আমরা কৃষককে ফজরের নামাজের পরে ও বিকেলে ডাল উঠাতে এবং ছাতা ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি।

 

উল্লেখ্য, চলতি বছর পটুয়াখালী জেলায় ৮৮ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে মুগডাল চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১১ হাজার ১১৪ মেট্রিক টন। যা গত বছরের চেয়ে ২০ হাজার মেট্রিক টন বেশি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন