আগস্টের গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি শনিবার (২১ ডিসেম্বর) নিজ এলাকা লুধিয়ারায় ফিরলে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বিক্ষুব্ধ ১০-১২ জন তাকে জুতার মালা পরিয়ে আবার এলাকা ছাড়া করার ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে জুতার মালা পড়ানোর ঘটনাটি রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় জামায়াত সমর্থক আবুল হাসেমসহ কয়েকজন তাকে জুতার মালা পড়িয়ে এলাকা ছেড়ে যেতে বলতে দেখা যায় ভিডিওতে। এ সময় তাকে গ্রামবাসীর কাছে একে একে ক্ষমা চাওয়ার জন্যও বলতে শোনা যায় ভাইরাল ভিডিওতে।
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সদস্য ও উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি। বাতিসা ইউনিয়নের লুধিয়ারা এলাকার মৃত ছলিম উদ্দিনের ছেলে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার প্রথমদিকে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ছিল তার ভালো সম্পর্ক- সে সময় এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। কিন্তু পরে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণে এলাকায় থাকতে পারেননি। হত্যা মামলায় আসামিও হয়েছেন। তৎকালীন সময়ে এক জামায়াত নেতাকে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে লাঞ্ছিত করায় তীব্র নিন্দা প্রেস উইংয়ের
ঘটনার সময় উপস্থিত আবুল হাসেমের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক কিংবা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে আরও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।’
ঘটনার বিষয়ে জানতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘রাতে ফেসবুকে আমি এ ধরনের একটি ভিডিও ক্লিপ দেখেছি। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইয়ের গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করা ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত শুরু করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে। সকলকে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।