মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধানের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করেছেন আইসিসির  কৌঁসুলি

১ সপ্তাহে আগে
বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের দায়ে দেশটির সামরিক জান্তা প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য বিচারকদের কাছে আবেদন করেছেন।  ২০২১ সালে নির্বাচিত নেতা অং সান সুচির কাছ থেকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন দেশটির জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল মিন অং হ্লাইং। হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও দেশত্যাগে বাধ্য করেছেন, যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল। গণধর্ষণ, হত্যা ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন চালায় সামরিক জান্তা। যার ফলে প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশের একটি শরণার্থী শিবির থেকে আইসিসির শীর্ষ কৌঁসুলি করিম খান এক বিবৃতিতে জানান, তিনি মিয়ানমারের নেতাদের বিরুদ্ধে শিগগির আরও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন জানাবেন।  এই অভিযোগের মূলে আছে ২০১৭ সালের আগস্টে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলার জবাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সন্ত্রাস দমন অভিযান। সে সময় মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হ্লাইং দেশটির সশস্ত্র বাহিনী (তাতমাদাও নামে পরিচিত) ও জাতীয় পুলিশকে বেসামরিক রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে কথিত আছে। বাংলাদেশ সফরকালে করিম খান বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন। বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। তাদের বেশিরভাগই মুসলিম। প্রায় সাত লাখ ৪০ হাজার মানুষ ২০১৭ সালে পালিয়ে আসেন। হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের করুণ পরিস্থিতি ইউক্রেন বা গাজার সংঘাতের মতো মনোযোগ আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জ্যেষ্ঠ আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার উপদেষ্টা মারিয়া এলেনা ভিগনোলি বলেন, “এমন সময় মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে আইসিসির কৌঁসুলি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নিলেন, যখন নতুন করে বেসামরিক রোহিঙ্গারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। চলমান পরিস্থিতি সবাইকে সাত বছর আগের দুর্দশার কথা মনে করিয়ে দেয়। নির্যাতন করেও দায়মুক্ত থাকার চক্র ভাঙার পথে আইসিসির এই উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” সামরিক জান্তার মুখপাত্র থেৎ সুইর কাছে মন্তব্য চাওয়া হলেও তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি। করিম খানের অনুরোধ এখন তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেলের কাছে পাঠানো হবে। তারা সব তথ্য প্রমাণ যাচাই সাপেক্ষে পরোয়ানা জারির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কোনো সময়সীমা নেই। ২০২৩ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নিতে তিন সপ্তাহেরও কম সময় লেগেছিল। কিন্তু করিম খান অনুরোধ জানানোর প্রায় ছয় মাস পর বিচারকরা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং হামাসের সামরিক প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।  
সম্পূর্ণ পড়ুন