মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা। সরজমিনে এখানকার ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সেবা গ্রহীতাদের অপেক্ষা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ভূমি অফিসে প্রকাশ্যেই সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে টাকা চাওয়া হয়। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালালরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে নয়, সরাসরি অর্থ দাবি করেন।
টাকা না দিলেই শুরু হয় নানা ধরনের হয়রানি। কাগজপত্র সংশোধনসহ যেকোনো কাজে সরকারি নির্ধারিত ফির তুলনায় কয়েকগুণ বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে। আর যদি কেউ টাকা না দেন, তাহলে সামান্য কাজ নিয়েও তাকে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর ঘুরতে হয়।
মামুন নামে এক সেবাগ্রহীতা জানান, ভূমি অফিসে কোনো কাজই টাকা ছাড়া হয় না। এখন ঘুষ নেয়ার পদ্ধতিও আধুনিক হয়েছে-কখনো ফোনে, কখনো গোপনে, আবার কখনো অফিসের বাইরেই প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেন হয়। কারো কাছ থেকে টাকা নেয়া হয় ডিজিটাল মাধ্যমে, আবার কারো কাছ থেকে সরাসরি। নাম ভুলসহ নানা কাজ দেখিয়ে, নানা কৌশলে এভাবে ঘুষ আদায় করা হয়।
আরও পড়ুন: কাগজপত্র ছাড়াই নামজারি করতে হুমকি, বৈষম্যবিরোধী নেতা সেজে ধরা যুবক
একই অভিযোগ জানিয়েছেন রফিক, সিরাজসহ আরও অনেক ভুক্তভোগী। কেউ কেউ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থাকলেও জানিয়েছেন, সব কাগজ ঠিক থাকলেও টাকা দিতে হয়-নিচ থেকে শুরু করে ওপর তলা পর্যন্ত।
শুধু ঘিওর নয়; এই অবস্থা জেলার দৌলতপুর, সাটুরিয়া, সিংগাইর ও হরিরামপুর উপজেলার ভূমি অফিস এবং এর অধীন ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতেও। নামজারির জন্য নির্ধারিত সরকারি ফি ১,১৫০ টাকা হলেও আদায় করা হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
জেলা প্রশাসক ড. মনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘সেবাগ্রহীতার হয়রানি ও দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধে সরকার কাজ করছে। এ জন্য বদলির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এরমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দালাল কিংবা অফিসের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি এর সঙ্গে জড়িত থাকে বা কোনো ভুক্তভোগী লিখিতভাবে অভিযোগ করেন, তাহলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব। তদন্তে কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় সাতটি উপজেলা ভূমি অফিস ছাড়াও রয়েছে মোট ৬৫টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস।
]]>