একসময় ছোট-বড় বহু নৌযান চলাচল করত খালটিতে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনে এখান থেকে নৌপথে বরিশাল যাতায়াত হতো বলে খালটির নাম ‘বরিশাল খাল’। কিন্তু ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দখল ও আবর্জনায় ভরাট হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় পানিপ্রবাহ। ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ, বাড়ে রোগবালাই। বর্ষায় সৃষ্টি হয় তীব্র জলাবদ্ধতা।
সরাসরি খালপাড় ঘুরে দেখা গেছে, এটি যেন এক সময়ের নাড়ির মত শহরের গুরুত্বপূর্ণ জলপথ নয়, বরং ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। কচুরিপানা ও আবর্জনায় বন্ধ হয়ে গেছে পানিপ্রবাহ।

সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) যৌথ উদ্যোগে খালের দু’পাড়ে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়। সে সময় খননের উদ্যোগ নিলেও তা অদৃশ্য কারণে স্থগিত হয়ে যায়।
পৌরসভার উদ্যোগে নতুন করে ইটেরপুল থেকে কুমার নদ পর্যন্ত খালের অংশবিশেষ খননের কাজ শুরু হয়েছে। এতে করে শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে অকেজো ৩৪ স্লুইস গেট, নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সম্পদ
ইটেরপুল এলাকার বাসিন্দা দুলাল মণ্ডল বলেন, ‘দীর্ঘদিন খালটির পানি চলাচল বন্ধ ছিল। এখন খনন শুরু হওয়ায় বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশন হবে। জলাবদ্ধতা বা মশার উৎপাত থাকবে না।’
স্থানীয় বাসিন্দা তরুণ কুমার দে বলেন, ‘খালটি ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে যাতায়াতে সমস্যা হতো। দুর্গন্ধ ছড়াতো। পরিষ্কার হলে আমরা অনেকটাই স্বস্তিতে থাকব।’
ব্যবসায়ী রফিক মিয়া বলেন, ‘খালটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল। পলিও জমেছে অনেক। খননের মাধ্যমে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। জলাবদ্ধতা ও দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি মিলবে।’

মাদারীপুর পৌরসভার প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুল আলম জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে খালটির অংশবিশেষ খননে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ভবিষ্যতে খালের দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং যারা খালে ময়লা ফেলবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
বৃহৎ পরিকল্পনার আওতায় পুরো খাল পুনরুদ্ধার করে নাব্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
]]>