মাদাগাস্কারে সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টা চলছে: প্রেসিডেন্টের কার্যালয়

১ সপ্তাহে আগে
মাদাগাস্কারে অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়লিনার কার্যালয়। এদিকে ক্যাপস্যাট বলে পরিচিত একটি বিদ্রোহী সেনা ইউনিট দাবি করেছে, তারা সামরিক কমান্ডের নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং স্থল, বিমান ও নৌসহ সবগুলো বাহিনী এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। খবর বিবিসির।

২০০৯ সালে এই সেনা ইউনিটটিই মালাগাসির রাজনৈতিক সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল যা রাজোয়েলিনাকে ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকারবিরোধী জেন-জি আন্দোলনে উত্তাল মাদাগাস্কার। এর মধ্যে আজ রোববার (১২ অক্টোবর) সেনা অভ্যুত্থানের খবর এলো।

 

বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর অন্যতম মাদাগাস্কার ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এরপর থেকে দেশটিতে ঘন ঘন জনবিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। যার মধ্যে ২০০৯ সালে বড় গণবিক্ষোভও রয়েছে যার ফলে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মার্ক রাভালোমানানা ক্ষমতাচ্যুত হন।

 

এরপর সেনাবাহিনীর সমর্থনে ক্ষমতায় আসেন রাজোয়েলিনা। এরপর ২০১৮ সালে এবং ২০২৩ সালে পরপর দুইবার বিরোধী দলহীন বিতর্কিত নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি। সবশেষ নির্বাচনের পর থেকে দেশটিতে জোরালো আন্দোলন শুরু হয়।

 

আরও পড়ুন: আফগান হামলায় কতজন সেনা নিহত হয়েছে, জানাল পাকিস্তান

 

সম্প্রতি ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ কেনিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার নেপালে সফল জেন-জি বিক্ষোভের পর গত ২৫ সেপ্টেম্বর উত্তাল হয়ে ওঠে মাদাগাস্কারও। পানি ও বিদ্যুৎ সংকটের পাশাপাশি বেকারত্ব, দুর্নীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন জেন-জিরা।তাদের এক দাবি, প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়েলিনার পদত্যাগ। 

 

তবে দাবি মানার পরিবর্তে শুরুতে থেকেই বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়ে আসছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২২ জন নিহত এবং ১০০ জন আহত হয়েছেন। 

 

আন্দোলনের চাপে গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট তার মন্ত্রিসভা ভেঙে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন। এরপরও ]পিছু হটছে না বিক্ষোভকারীরা। রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, গত শনিবার (১১ অক্টোবর) আন্দোলনকারীরা রাজধানী আনতানানারিভোর ঐতিহাসিক ‘মে ১৩’ চত্বরে অবস্থান গ্রহণ করে। এদিন দেশটির সেনাবাহিনীও বিক্ষোভকারীদের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন ব্যক্ত করে।

 

আরও পড়ুন: পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘাত নিয়ে ইরানের বার্তা

 

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, প্রয়োজনে সরকারের নির্দেশ অমান্য করে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকতে সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানায় সেনা ইউনিট ‘ক্যাপস্যাট’। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ক্যাপস্যাট সদস্যদের ‘জনগণের পাশে থাকার’ আহ্বান জানাতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে সরকারের দেয়া ‘গুলি করার নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করার’ জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

 

সেনা অভ্যুত্থানের অভিযোগ

 

এর একদিন পরই সেনা অভ্যুত্থানের চেষ্টার অভিযোগ আনলো প্রেসিডেন্টের কার্যালয়। রোববার (১২ অক্টোবর) প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই মুহূর্তে মাদাগাস্কার প্রজাতন্ত্রের ভূখণ্ডে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চলছে, যা সংবিধান ও গণতান্ত্রিক নীতির সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।’

 

একে দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করে দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ শক্তিকে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এদিকে ক্যাপস্যাট জানিয়েছে, তারা জেনারেল ডেমোস্থেন পিকুলাসকে সেনাবাহিনীর নতুন চিফ অফ স্টাফ নিয়োগ করেছে। তাদের ফেসবুক পেজে এ ব্যাপারে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন