মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটি মারা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)।
এতে বলা হয়, "অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে যে, মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আজ ১৩ মার্চ দুপুর ১টায় সিএমএইচে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে।"
“সিএমএইচের সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে, দুবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃদস্পন্দন ফিরে আসেনি।”
শিশুটিকে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকাল সোয়া ৫টার দিকে হেলিকপ্টারে করে মেয়েটির লাশ মাগুরা স্টেডিয়ামে আনার কয়েক ঘণ্টা পর তাকে দাফন করা হয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় মাগুরা নোমানী ময়দানে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
৮ মার্চ শিশুটিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে তারা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এক শোকবার্তায় শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
গত ৫ মার্চ রাতে মাগুরা সদর উপজেলার নিজনান্দুয়ালি গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি।
শিশুটি রাতে তার বোনের সঙ্গে বিছানায় ঘুমিয়েছিল। কিন্তু গভীর রাতে হঠাৎ তার বোন তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে তার সন্ধান শুরু করেন তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ি থেকে কয়েক গজ দূরে মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়।
সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে মাগুরা জেনারেল হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং পরে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়।
মেয়েটিকে ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। আসামিদের ফাঁসির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।