সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মহাসড়কের পাশে কোনো ধরনের পশুরহাট বসানো সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে ৩১ মে শুক্রবার বিকেলে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান, বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য বাজার এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় বাজার পরিচালনা কমিটিকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, শনিবার (৩১ মে) কোনোভাবে পশুরহাট বসানো যাবে না। নির্দেশনা অমান্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা ও প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় প্রশাসন।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান ৭ জানুয়ারি জনতার বাজার পশুরহাট সরানোর লিখিত নির্দেশ দেন। এরপর ৩১ জানুয়ারি হাট সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে হাট-বাজার আইন ২০২৩ ও মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তবে বাস্তবে এসব নির্দেশ কার্যকর হয়নি। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে বাজার কমিটি গত চার মাসে অন্তত ১৭ বার হাট বসিয়েছে।
এদিকে বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী তোফায়েল আহমেদ ৩ মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন। আদালত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন এবং জেলা প্রশাসক ও ইউএনওকে চার সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেন।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় গরুর হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের দায়ে জরিমানা
স্থানীয় সূত্র বলছে, হাটে প্রত্যয়ন ফি’র নামে প্রতি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দেড় হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসে প্রতিটি হাটে ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ।
অভিযোগ রয়েছে, এই হাট পরিচালনার সাথে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও একটি প্রভাবশালী সংঘবদ্ধ চক্র যুক্ত রয়েছে। নাম উঠে এসেছে যুদ্ধাপরাধ মামলায় অভিযুক্ত সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপ, আওয়ামী লীগ নেতা কাজী তোফায়েল, গোলাম মর্তুজা স্বপন, বিএনপির কাওছার আহমদসহ আরও কয়েকজনের।
নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাজার কমিটি ইতোমধ্যে হাট বসানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। নতুন করে হাটের বিভিন্ন স্থানে খুঁটি পোঁতা হয়েছে। মাইকিং করে জানানো হয়েছে— 'হাট বসবে এবং বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।'
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, জনতার বাজারে পশুরহাট না বসাতে সরেজমিনে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করে হাট বসালে প্রশাসন বল প্রয়োগসহ কঠোর ব্যবস্থা নেবে।