বুধবার বিকেলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম ও সুরাইয়া পারভীন শেলি, উপসচিব মোছা. জেসমিন আক্তার বানুসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিআইডব্লিউটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভোলার ইলিশা ঘাটে আসেন। তাদের আসার খবরে দুপুর থেকেই ঘাটে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন স্পীডবোট মালিক ও চালকরা। পরে সহকারী পরিচালক ও ভোলা নদী বন্দর কর্মকর্তা মো. রিয়াদ হোসেনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকা থেকে আসা কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনকারীরা। এক পর্যায়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাদের গাড়িতে উঠে চলে গেলে সহকারি পরিচালক রিয়াদ হোসেনকে একটি গাড়ির মধ্যে অবরুদ্ধ রেখে ব্যঙ্গাত্মক স্লোগান দিতে শোনা যায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
লিখিত অভিযোগে স্পিডবোট মালিক-চালক সমিতি উল্লেখ করেন, স্পিডবোট মালিক ও চালকগণ দীর্ঘদিন ধরে সহকারী পারিচালক রিয়াদ হোসেনের দ্বারা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন। এ কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে প্রতিমাসে স্পিডবোটের টাইম-টেবিলের নাম করে এক হাজার ২শ’ টাকা করে নিয়ে থাকে। এর কোনো রসিদ দেয় না। ভেদুরিয়া ঘাটে মোট ৭৫ থেকে ৮০টি বোট প্রতিমাসে তাকে প্রায় এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদা না দিলে তাদেরকে মামলার ভয় দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: ভোলায় নিজ ঘরে মাদ্রাসা শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা
এছাড়াও প্রতিমাসে আরো ৬০ হাজার টাকা বিআইডব্লিউটিএর প্রধান কার্যালয়ের নাম দিয়ে স্পিডবোট মালিকদের কাছ থেকে নিয়ে থাকেন। তার এ সকল দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্পিডবোট মালিক ও চালকরা গত দুই মাস ধরে আন্দোলন করায় তাদেরকে এখন আর কোনো টাইম-টেবিল (সময়) দিচ্ছেন না।
বিষয়টি নিয়ে তারা গত ২১ জুন ভোলার জেলা প্রশাসক বরাবর ও ২৩জুন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। এরপরও রিয়াদ হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তার ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় উল্টো বোট মালিক ও চালকদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। এ সকল দুর্নীতির তদন্ত করে বিচারের পাশাপাশি তাকে দ্রুত ভোলা থেকে বদলী না করলে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্পিডবোট ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।
তবে এ বিষয়ে সচিবগণ গণমাধ্যমের সামনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: ভোলায় সময় টিভির সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা, আসামি ২৫
বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেন জানান, স্পীডবোট মালিক ও চালক সমিতির লোকজন ভেদুরিয়া ঘাটের সরকারি ভাড়ার চার্ট মানে না। তা ছিড়ে ফেলে ও ট্রাফিক সুপারভাইজারের গায়ে হাত দেয়। এতে প্রথমে জিডি ও পরবর্তীতে মামলা হয়েছে। এ কারণে তারা মানববন্ধন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ছোট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এসব কাজ করছে।
]]>