টাকা আত্মসাতের পর দীর্ঘদিনেও ফেরত না দেয়ায় ভুক্তভোগী আব্দুল গণি ও নাজমুল হক র্যাবের কাছে অভিযোগ করলে শুরু হয় তদন্ত। অবশেষে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত পৌনে ২ টার দিকে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে প্রতারক একই উপজেলার পটিরা গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামকে আটক করে র্যাব-১৪।
শুক্রবার (৩০ মে) দুপুরে র্যাব-১৪ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অধিনায়ক নয়মুল হাসান।
শফিকুল ইসলাম নিজ এলাকায় পরিচিত আদম ব্যবসায়ী হিসেবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মানুষজনকে বিদেশে কাজে পাঠানোর কথা বলে কয়েক বছরেই তিনি হাতিয়েছেন প্রায় কোটি টাকা। নকল ভিসা ও বিমানের টিকিট তৈরি করে এ প্রতারণা করতেন তিনি। র্যাব জানায়, শফিকুল ‘জাজিরা এয়ারওয়েজ’, ‘এয়ার আরাবিয়া’, ‘সালাম এয়ার’, ‘ইজিপ্ট এয়ার’সহ বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে নকল টিকিট বানিয়ে প্রতারণা করতেন।
আরও পড়ুন: ‘চাঁদপুরের তাজা ইলিশ বিক্রি’র ফাঁদ, ডিবির জালে ধরা ৮
শফিকুলের বিরুদ্ধে র্যাবের কাছে অভিযোগ করা ফুলবাড়িয়া উপজেলার শুশুতি গ্রামের আবদুল গণি বলেন, ‘ভাগ্যবদলের আশায় তুরস্কে যাওয়ার জন্য শফিকুলের হাতে মোট ৬ লাখ ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছিলেন। তুরস্কে নেওয়ার কথা বলে পাসপোর্ট ও টাকা জমা নিলেও দেড় বছর ঘোরান শফিকুল। এরপর জানান, তুরস্ক যাওয়া যাবে না, ২০ দিনের মধ্যে সৌদি আরব পাঠানো হবে। তবে সেখানেও পাঠাতে পারেননি তিনি। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘জাজিরা এয়ারওয়েজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া বিমানের টিকিট ও ভিসা দেওয়া হয়েছিল। পরে জানা যায়, টিকিট ও ভিসা দুটোই নকল। এরপর টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও ১০ এপ্রিল থেকেই এলাকা ছেড়ে পালান শফিকুল। দাদনের চাপ ও টাকা ফেরত না পেয়ে নিরুপায় হয়ে তিনি র্যাবের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
আরেক ভুক্তভোগী একই উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের পাহাড় অনন্তপুর গ্রামের নাজমুল হক বলেন,
‘আমার যা সম্বল ছিল, সব বিক্রি করে ও দাদনে টাকা এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমাকেও বিদেশে পাঠানো হয়নি। টাকা চাইতে গেলে উল্টো আমাকে নানা হুমকি-ধমকি দিতেন শফিকুল।’
র্যাব ১৪'র অধিনায়ক নয়মুল হাসান বলেন, ‘মানব পাচার ও প্রতারণার উদ্দেশ্যে গ্রামের সরল মানুষের সঙ্গে প্রায় তিন বছর ধরে প্রতারণা করছিলেন শফিকুল। এই তিন বছরে তিনি প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ কাজে জড়িত অন্যদের ব্যাপারেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।’