বুধবার (২ জুলাই) পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ অভিযোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির নেতারা।
বুধবার সকালে কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে এনসিপির রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী শামীমা সুলতানা মায়া পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম নূর হোসেন নির্ঝরের কার্যালয়ে যান। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, বেলপুকুরে ভিজিডির কার্ড ভাগাভাগির কারণে প্রকৃত দুস্থরা বঞ্চিত হবেন। তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ইউএনওর প্রতি অনুরোধ জানান।
পরে ইউএনওর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এসে শামীমা ইউপি চেয়ারম্যান বদিউজ্জামানকে ফোন করেন। এ সময় চেয়ারম্যান তাকে বলেন, বিএনপি-জামায়াত কার্ড ভাগাভাগি করে নিয়েছে। তিনি ভয়ে ইউপি কার্যালয়ে যাননি। এ সময় শামীমা তাকে আশ্বাস দেন, তিনি পুলিশ নিয়ে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যানও যেন আসেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতা মো. বদিউজ্জামান কার্যালয়ে যাননি।
আরও পড়ুন: দখল-দূষণে মৃতপ্রায় রাজশাহী বিভাগের ৪০ নদী
এনসিপি নেত্রী শামীমা সুলতানা মায়া বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত নাকি বেলপুকুর ইউপির সব কার্ড ভাগাভাগি করে নিয়েছে। চেয়ারম্যানকে চাপ প্রয়োগ করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? এই জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কেন স্বৈরাচারী ব্যবস্থা থাকবে? সে জন্যই আমরা অভিযোগ জানাতে এসেছিলাম।’
ইউপি চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘আমার ৯টি ওয়ার্ডের জন্য কার্ড এসেছে ৪০০টি। এই কার্ডের জন্য ১ হাজার ৬৫৭ জন আবেদন করেছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্যরা যাচাই-বাছাই করে তালিকা ইউনিয়ন কমিটিতে আনার কথা। ইউনিয়ন কমিটি এই তালিকা উপজেলা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠাবে। কিন্তু কয়েক দিন ধরে বিএনপি-জামায়াতের নেতারা এসে তালিকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। ফলে তালিকা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। পাঁচ-সাত দিন আগেই সময় শেষ হয়ে গেলেও তিনি তালিকা তৈরি করতে পারেননি। তিনি ইউএনওকে বলে দিয়েছিলেন, উপজেলায় লটারি করার জন্য। এরমধ্যে গেল মঙ্গলবার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম ইউএনওর কাছে যান। তিনি লটারি না করে সমঝোতার মাধ্যমে তালিকা করার অনুমতি নিয়ে আসেন। এরপর তারা সবাই মিলে বসে তালিকা চূড়ান্ত করেন।
জানা গেছে, ভিজিডি কার্ড ভাগাভাগিতে বিএনপির পক্ষে ছিলেন ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বাক্কার, আর জামায়াতের পক্ষে ছিলেন দলটির নেতা ও শিক্ষক ফাইসুল ইসলাম। বিএনপি নেতা আবু বাক্কার বলেন, ‘আমরা তো সবাই মিলেই ভাগযোগ করলাম। সবাই মেনে নিলাম। জামায়াতের যে চাহিদা ছিল ৯০টা, সেটিও দেওয়া হয়েছে। এখন কে ঝামেলা করছে, তা তো জানি না।’
পুঠিয়ার ইউএনও এ কে এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ যদি না পারে, তাহলে লটারি হবে। ইউনিয়ন যাচাই-বাছাই কমিটি আমাদের লিখিতভাবে জানালে উপজেলা কমিটি লটারি করার ব্যবস্থা নেবে।
]]>