স্থলবন্দর সংলগ্ন এলাকাগুলো, বিশেষ করে জার্জি ও কলন্দি খাল দিয়ে হঠাৎ করে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। একই সঙ্গে মরা গাং, হাওড়া নদী ও সংযুক্ত খালগুলোতে পানির স্তর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে।
প্লাবিত গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আব্দুল্লাহপুর, বঙ্গেরচর, বাউতলা, উমেদপুর, রাজেন্দ্রপুর, ইটনা, কর্নেল বাজার ও কেন্দুয়াই এলাকার বসতিপূর্ণ কিছু অংশ। এসব এলাকার বহু ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি ইতোমধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ও মনিয়ন্দ ইউনিয়নের একাধিক এলাকার মানুষ জানায়, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পানি ঘরে ঢুকে পড়ে। শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে তারা নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করলেও আশ্রয়কেন্দ্র ছিল অপর্যাপ্ত।
আখাউড়া উপজেলার আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া শেফালী বেগম ও সুরাইয়া বলেন, 'সকাল থেকে স্কুলে অবস্থান করছি। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত কেউ কোন খোঁজ নেয়নি। খাবার বা ওষুধ কিছুই পাইনি।'
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢলে বেড়েই চলছে মৌলভীবাজারের সব নদীর পানি, বন্যা আতঙ্ক
স্থানীয় বাসিন্দা সজিব আহমেদ বলেন, 'রাত থেকে পানি ঢুকছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে না।'
আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বন্দরের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। মৎস্য রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া বলেন, 'রফতানি কার্যক্রম এখনো বন্ধ হয়নি, তবে পানির যে গতি তাতে আখাউড়া-আগরতলা সড়ক তলিয়ে যেতে পারে। এতে দুই দেশের মধ্যে স্থলবাণিজ্য বন্ধ হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।'
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান জানান, হাওড়া নদীর পানি স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০-৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনো বিপদসীমা অতিক্রম করেনি, ২ মিটার নিচে রয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি.এম. রাশেদুল ইসলাম বলেন, 'আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার, ওষুধ ও নগদ সহায়তা সরবরাহের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নতুন করে বৃষ্টি না হলে পানি দ্রুত নেমে যাবে।'