ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, আগামী ২৫ এবং ২৬ জুলাই মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর আতিথ্যপ্রাপ্ত প্রথম বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মালে সফর করবেন মোদি। সেখানে তিনি ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন এবং আরও এক বছরের জন্য ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ট্রেজারি বিল পেশ করে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সহায়তা দেবে ভারত সরকার।
মালদ্বীপের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন এবং মুইজ্জুর সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনাও করবেন মোদি।
মোদির সফরের আগে, মালদ্বীপের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ শহীদ দুই দেশের মধ্যে অতীতের সম্পর্ক এবং জরুরি পরিস্থিতির সময় ‘নির্ভরযোগ্য প্রথম প্রতিক্রিয়াশীল’ হিসেবে ভারতের প্রশংসা করেছেন।
আরও পড়ুন: বাড়ি ভাড়া নিয়ে ভুয়া দূতাবাস, স্বঘোষিত রাষ্ট্রদূতকে ধরল পুলিশ!
তিনি বলেন, ‘মালদ্বীপ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক সর্বদাই প্রমাণ করেছে যে ভারতই প্রথম সাড়া দেয়। যখনই আমরা আন্তর্জাতিক লাইনে ফোন করি, ভারতই প্রথমে সাড়া দেয়।’
এর অনেক কারণ আছে উল্লেখ করে আবদুল্লাহ শহীদ বলেন,
প্রথমত, ভারতীয়দের মর অনেক বড়... তারা সবচেয়ে উদার। দ্বিতীয়ত, ভারত ভৌগোলিকভাবে মালদ্বীপের খুব কাছাকাছি। মালদ্বীপে যখনই জরুরি এবং দুর্দশাগ্রস্ত কিছু ঘটে, ভারত কখনো আমাদের হতাশ করেনি।
মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদও একই রকম মন্তব্য করেছেন। নিজ দেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উদ্বেগের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘ভারত না থাকলে, আমরা ঋণখেলাপি হয়ে যেতাম।’
তিনি বলেন,
আমরা সবসময় ইন্ডিয়া-ফার্স্ট বিদেশ নীতি বজায় রেখেছি। কিন্তু অতীতে, নির্বাচনী চক্রগুলো কখনও কখনও আমাদের চীনপন্থি এবং ভারতপন্থি অবস্থানের মধ্যে দোদুল্যমান থাকতে বাধ্য করেছে।
প্রতিবেদন মতে, নাশিদের ‘চীনপন্থি অবস্থান’ মন্তব্যকে তার উত্তরসূরি মোহাম্মদ মুইজ্জুর প্রতি সরাসরি আঘাত হিসেবে দেখা হয়েছিল, যিনি তার পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে দিল্লির চেয়ে বেইজিংকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের বার্তা
মোহাম্মদ মুইজ্জু ২০২৩ সালের নভেম্বরে ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর, সেখানে মোতায়েন ভারতীয় সামরিক কর্মীদের অপসারণের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছিল। একইসঙ্গে, চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নের নানা উদ্যোগ নিতে দেখা যায় মালদ্বীপকে। এরপরই মূলত দিল্লি-মালে ঘনিষ্ঠতা হুমকির মুখে পড়ে। যদিও মুইজ্জু বলেছিলেন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় ভারত তাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবেই রয়ে গেছে এবং তিনি কেবল মালদ্বীপের জন্য আরও সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছেন।
এছাড়া কয়েক মাসের অস্থিরতার পর, গত বছরের আগস্টে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মালদ্বীপ সফর এবং অক্টোবরে মালদ্বীপের নেতার দিল্লি সফরের মাধ্যমে সম্পর্কের উন্নতি হতে শুরু করে। সেই সফরে মোদির সাথে দেখা করেছিলেন মুইজ্জু এবং একটি ইংরেজি দৈনিককে বলেছিলেন, ‘মালদ্বীপ কখনোই ভারতের নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করার মতো কিছু করবে না।’
সূত্র: এনডিটিভি
]]>