জানা গেছে, জেলার কমলনগর, রামগতি ও সদর উপজেলার জেলেরা নদীতে সারাদিন জাল ফেলেও কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ পাচ্ছেন না। নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৬৭ জন হলেও মাছের অভাবে জীবিকা নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছেন সবাই।
কমলনগরের মতিরহাট এলাকার জেলে রুবেল বলেন, ‘নদীতে আগে প্রচুর ইলিশ পড়ত, এখন দিনে একেকবার নদীতে যেতে খরচ হয় ৪-৫ হাজার টাকা, অথচ মাছ বিক্রি করে পাই মাত্র ১৫-২০ শ টাকা।’
আরেক জেলে ছালাম মাঝি বলেন, ‘নদীতে যা পাই, তা দিয়ে নিজেদের পেটই চলে না, পরিবার চালানো তো দূরের কথা। কিন্তু পেশার কারণে নদীতেই যেতে হয়।’
মজুচৌধুরীর হাট মাছ ঘাটের আড়ৎদার নাছির উদ্দিন রিয়াজ বলেন, ‘নাব্যতা সংকটের কারণে ভরা মৌসুমেও এখন মেঘনায় ইলিশ নেই। ঘাটে নেই আগের মতো হাঁকডাক। দাদনের টাকা উঠে আসছে না।’
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে খুচরা ও পাইকারি বাজারে বাড়ছে মাছের দাম
মতিরহাট মাছ ঘাটের ব্যবসায়ী আবদুল মতিন বলেন, ‘লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়েছি, কিন্তু জেলেরা মাছ পাচ্ছে না। আমরা কঠিন সংকটে আছি।’
মতিরহাট মাছ ঘাটের সভাপতি আবদুল খালেক মেম্বার বলেন, ‘নদীর নাব্যতা না ফিরালে ভবিষ্যতে আর ইলিশের দেখা মিলবে না। এখনকার অবস্থা খুবই করুণ।’
জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্মীপুরে ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ২৩ হাজার টন। ২৫টি মাছ ঘাটে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে।
তবে স্থানীয় জেলে ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মৎস্য বিভাগ প্রকৃত চিত্র আড়াল করছে। তারা বলেন, ‘এসি রুমে বসে মনগড়া প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে, মাঠপর্যায়ে সঠিক তথ্য কেউ নিচ্ছে না।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘সমুদ্রে ইলিশ ধরা পড়লেও জলবায়ু পরিবর্তন, নদীর নাব্য সংকট এবং বৃষ্টিপাতের ঘাটতির কারণে মেঘনায় ইলিশ মিলছে না। তবে বৃষ্টিপাত হলে আগামী মাসের শেষের দিকে ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করা যায়।’
]]>