ব্রিটেনে যুক্তরাষ্ট্রের চারটি সামরিক ঘাঁটির উপর দিয়ে গত কয়েক দিন কয়েকটি ড্রোন উড়তে দেখা গেছে; এই ঘটনা ব্রিটিশ ও আমেরিকার কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে। এই ঘাঁটিগুলির আশেপাশে কয়েক ডজন সৈন্য মোতায়েন করেছে ব্রিটেন। রাশিয়ার মতো কোনও শত্রুপক্ষ অন্তর্ঘাত বা নাশকতা চালাতে এই কাজ করে থাকতে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে।
বুধবার জারি করা এক বিবৃতিতে ইউরোপে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী বলেছে, “২০ নভেম্বর থেকে রয়্যাল এয়ার ফোর্স ল্যাকেনহিথ, র্যাফ মিল্ডেনহল, র্যাফ ফেল্টওয়েল ও র্যাফ ফেয়ারফোর্ড এলাকার উপরে ও আশেপাশে মনুষ্যবিহীন এরিয়েল ড্রোন বারবার দেখা গেছে।” তারা আরও বলেছে, দৃশ্যমান ড্রোনের সংখ্যার তারতম্য রয়েছে।
এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আজ অবধি ঘাঁটির কর্তারা জানিয়েছে, কোনও অনুপ্রবেশই ঘাঁটিগুলির বাসিন্দা, সরঞ্জাম বা সম্পদের ক্ষতি করতে পারেনি। পূর্বোক্ত ঘাঁটি ও এগুলির বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দিতে সব রকম উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে বিমান বাহিনী।”
পূর্ব ব্রিটেনের র্যাফ ল্যাকেনহিথে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর ৪৮তম ফাইটার উইং, বেশ কয়েকটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য বিমান। সে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে থাকা র্যাফ ফেয়ারফোর্ড ঘাঁটিতে বর্তমানে আমেরিকার চারটি বি-৫২ বোমারু বিমান রয়েছে।
চলতি সপ্তাহে পেন্টাগন বলেছে, তারা পরিস্থিতির দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার মঙ্গলবার সংবাদদাতাদের বলেছেন, “মূল কথা হল, এটা এমন একটা বিষয় যাকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আমরা এই বিষয়ে নজর রেখে চলেছি। তবে, এখনও পর্যন্ত এর কোনও উল্লেখযোগ্য প্রভাব নেই।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন, এই ছোট ড্রোনগুলি “এখন তুলনামূলকভাবে সাধারণ বিষয়” হয়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলির আশেপাশে প্রায় ৬০ জন সৈন্য মোতায়েন করেছে ব্রিটেন। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিয়া ইগল বলেছেন, তারা “বহুস্তরীয় নিরাপত্তাগত পদক্ষেপ” নিচ্ছেন।
ব্রিটেনের বার্মিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ের অধ্যাপক ডেভিড ডান বলেছেন, ড্রোনগুলির ওড়ার ধরন দেখে আন্দাজ করা যাচ্ছে, কেউ শখ করে এগুলি পরিচালনা করছে না। ড্রোন কীভাবে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে তা নিয়ে তিনি বিস্তারিত লিখেছেন।
এই ড্রোনগুলি অন্য কারণেও ব্যবহৃত হতে পারে।
টাইমস অফ লন্ডন সংবাদপত্র জানিয়েছে, এই ঘটনার চক্রী হিসেবে রাশিয়াকে বাতিল করেনি কর্তৃপক্ষ। ডান বলেছেন, মস্কো বিভিন্ন কায়দা ও কৌশলে হামলা চালাতে চাইছে এর প্রমাণ রয়েছে; অর্থাৎ এটা একটা অ-সামরিক ধরনের যুদ্ধ যা ধ্বংসাত্মক হতে পারে।
খবর প্রকাশের আগে লন্ডনে থাকা রুশ দূতাবাসকে এই বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য ভিওএ অনুরোধ করলেও তারা কোনও মন্তব্য করেনি। পশ্চিমা দেশগুলিতে বিভিন্ন ধরনের হামলা চালানোয় যুক্ত থাকার অভিযোগ এর আগে অস্বীকার করেছে মস্কো।