বেড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের গাড়ির চাপ, গতিসীমা মানছেন না চালকরা

৩ সপ্তাহ আগে
পবিত্র ঈদুল আজহার টানা ১০ দিনের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। পরিবারের সঙ্গে আনন্দমুখর দিন কাটিয়ে আবারও ছুটতে হচ্ছে কর্মস্থলে। শনিবার (১৪ জুন) ছুটির শেষ দিনে কর্মস্থলে ফেরা গাড়ির চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। পরিবহনের বাড়তি চাপে ব্যস্ত ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে।

এ দিকে ব্যস্ত এই মহাসড়কে পরিবহনের গতি নিয়ন্ত্রণে না থাকায় ঘটছে দুর্ঘটনা! শুক্রবার দিনগত রাতে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে বাস-ট্রাক সংঘর্ষের ঘটনায় দুজনের প্রাণহানিসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।


জানা গেছে, ঈদের দীর্ঘ ছুটি শেষে কর্মস্থল ঢাকায় ফেরার হিড়িক পড়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরেই যাত্রীদের বাড়তি চাপ রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার পরিবহনের চাপে পদ্মাসেতু ও এক্সপ্রেসওয়েতে পরিবহনের ব্যস্ততা রয়েছে কয়েকগুণ বেশি। প্রতিটি পরিবহনেই ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বাড়তি যাত্রী রয়েছে। যাত্রীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় পরিবহনগুলো বাড়িয়ে দিয়েছে ভাড়াও।


দূরপাল্লার পরিবহনে দাঁড়িয়ে না গেলেও লোকাল বাসগুলোতে দাঁড়িয়েও যাত্রী নিচ্ছে। যাত্রীদের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহনগুলো বাড়তি ট্রিপের জন্য স্বাভাবিকের চেয়েও অতিরিক্ত গতিতে চালাচ্ছে গাড়ি। ঢাকায় যাত্রী নামিয়ে দিয়েই আবার দ্রুতগতিতে ফিরছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। দ্রুত যাত্রী নিয়ে আবার ছুটছে রাজধানীর উদ্দেশ্যে। আর এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা।


আরও পড়ুন: চালকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় এক্সপ্রেসওয়েতে বাড়ছে দুর্ঘটনা-প্রাণহানি


বাসচালক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ মৌসুমে যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাসের ট্রিপের সংখ্যাও বেড়েছে। এখন যাত্রীদের ঢাকায় নামিয়ে দিয়ে দ্রুত আবার ফিরে এসে যাত্রী উঠাতে হচ্ছে। ফলে যাওয়া ও আসা উভয় ক্ষেত্রেই বাস দ্রুতগতিতে চালাতে হয়। এ কারণেই ঈদের সময় মহাসড়কে গাড়ির গতি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশিই থাকে।


শিবচর হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের মহাসড়কগুলোতে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। তবে এক্সপ্রেসওয়েতে কোনো গাড়িই এই গতিসীমা মানতে চায় না। গত তিনদিনে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর দায়ে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরে ৪৫টি পরিবহনকে মামলা দেয়া হয়েছে। যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার এবং মাইক্রোবাসের মধ্যে গতিসীমা না মানার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।


এ দিকে পদ্মাসেতুতেও পরিবহনগুলো নিয়ন্ত্রিত গতিতে চলে না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। যাত্রীবাহী বাসগুলো সেতুর ওপরও দ্রুতগতিতে চলাচল করে। ফলে সেতুর ওপর বিভিন্ন সময় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।


আরও পড়ুন: ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাক-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুই বন্ধু নিহত


ঢাকাগামী যাত্রী মো. কাওসার বলেন, ‘শনিবার গাড়িতে যাত্রীদের চাপ বেশি। রোববার (১৫ জুন) অফিস খুলে যাচ্ছে। গাড়িতে জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। দাঁড়িয়েও যাত্রীরা ঢাকা যাচ্ছেন।’


আরেক যাত্রী মো. মোতালেব মিয়া বলেন, ‘হাইওয়েতে গাড়িগুলো প্রচণ্ডগতিতে চলাচল করে। অনেক সময় ভয় লাগে। চালককে আস্তে চালাতে বললেও শোনে না।’


প্রাইভেটকার চালক মো. মিতুল বলেন, ‘মহাসড়কে ঘণ্টায় আশি কিলোমিটার গতিতে চলাচলের নিয়ম থাকলেও অন্যান্য পরিবহনগুলো অধিক গতিতে চলে। সেক্ষেত্রে তাল মেলাতে বাড়তি গতিতে চালাতে হয়। গতি বেশি থাকার কারণে মামলায় পড়তে হয়!’


আরও পড়ুন: এক্সপ্রেসওয়েতে বসছে ক্যামেরা, স্পিড গানসহ আধুনিক প্রযুক্তি, কমবে অপরাধ-দুর্ঘটনা


শিবচর হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট আশিকুর রহমান বলেন, ‘হাইওয়ের শিবচর অংশে আমরা গত তিন দিনে অতিরিক্ত গতির কারণে ৪৫টি যানবাহনকে মামলা দিয়েছি। শুক্রবার ১৯টি যানবাহনকে অতিরিক্ত গতির কারণে মামলা দেয়া হয়েছে।’


তিনি আরও বলেন, ‘সুযোগ পেলেই প্রাইভেটকার, বাস এবং মোটরসাইকেল অতিরিক্ত গতিতে চলাচল করে। আমরা হাইওয়েতে স্পিডগানের মাধ্যমে যানবাহনের গতি নির্ণয় করি। পদ্মা সেতুর ওপর স্পিডগানের ব্যবহার না থাকায় সেতুর ওপর চালকেরা ইচ্ছামত গাড়ি চালায়।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন