বিয়ের পর বাবার বাড়ি গেলে নামাজ কসর পড়া যাবে?

১ সপ্তাহে আগে
নামাজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। এটি আদায় করা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের জন্য ফরজ। এটি আদায়ের রয়েছে নির্দিষ্ট নিয়ম। এ নিয়মের আলোকে নামাজ আদায় করতে হয়।

অনেকে জানতে চান, বিয়ের পর বাবার বাড়ি গেলে নামাজ কসর পড়া যাবে?

 

এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, কোনো নারী যদি বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে স্বামীর সঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করেন, মাঝে মাঝে কিছুদিনের জন্য বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান, তাহলে স্বামীর বাড়িই স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে গণ্য হয়। তাই তার বাবার বাড়ি যদি স্বামীর বাড়ি থেকে সফর পরিমাণ (প্রায় ৭৮ কিলোমিটার) দূরত্বে অবস্থিত হয়, তাহলে ওই নারী ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেলে সেখানে মুসাফির হিসেবে গণ্য হবেন এবং নামাজ কসর করবেন।

 

তবে কোনো নারী যদি বিয়ের পরও বাবার বাড়িতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন, তাহলে বাবার বাড়িই তার স্থায়ী ঠিকানা গণ্য হবে। মাঝে মাঝে ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য স্বামীর বাড়িতে বেড়াতে গেলে সেখানে তিনি কসর করবেন যদি স্বামীর বাড়ি বাবার বাড়ি থেকে সফর পরিমাণ দূরত্বে অবস্থিত হয়।

 

নামাজ কসর পড়ার বিধান

 

প্রতিদিনের চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো অর্থাৎ জোহর, আসর ও ইশার নামাজ মুসাফিরদের জন্য আল্লাহ কসর বা সংক্ষিপ্ত করে দিয়েছেন। সফর অবস্থায় এ নামাজগুলো দুই রাকাত পড়তে হয়।

 

মাগরিব ও ফজরে কসর নেই। এ দুই ওয়াক্তের ফরজ নামাজ যথাক্রমে তিন রাকাত ও দুই রাকাতই আদায় করতে হবে। ফরজ ছাড়া অন্য নামাজগুলো কসর হয় না। তাই সেগুলো আদায় করলে পরিপূর্ণভাবেই আদায় করতে হবে। বিতর তিন রাকাতই আদায় করতে হবে। তবে সুন্নতে মুআক্কাদা নামাজ অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজের সাথে প্রতিদিন যে বারো রাকাত সুন্নাত নামাজ আমরা আদায় করে থাকি, এগুলো সফর অবস্থায় আবশ্যক থাকে না। ক্লান্তি বা ব্যস্ততা থাকলে এই নামাজগুলো ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে সময় সুযোগ থাকলে পড়ে নেওয়াই উত্তম।

 

মুসাফির যদি ভুলে পূর্ণ নামাজ পড়ে আদায় হবে?

 

মুসাফির ব্যক্তি কসর না করে যদি ভুলে চার রাকাতই পড়ে নেয় সেক্ষেত্রে দেখতে হবে সে দুই রাকাতের পর বৈঠক করেছে কি না, যদি করে থাকে তাহলে তার ঐ ফরজ নামাজ আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে প্রথম দুই রাকাত ফরজ এবং শেষ দুই রাকাত নফল হবে। আর ঐ ভুলের কারণে তাকে সাহু সিজদা করতে হবে।

 

ইসলামি শরিয়া মতে মুসাফির হচ্ছে কোনও ব্যক্তির তার অবস্থানস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরে কোথাও সফরের নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরিয়ে যাওয়া এবং সেখানে ১৫ দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করা।

 

আর মুসাফির নামাজে কসর করার সুযোগ পাবেন। আরবি কসর শব্দের অর্থ হলো- কম করা, কমানো। পরিভাষায়- সফরের সময়ে চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাত পড়াকে কসর বলে।

 

হজরত হাসান বসরি (রহ.) বলেন, কোনো মুসাফির ভুলে জোহরের নামাজ চার রাকাত পড়ে নিলে সাহু সেজদা করবে। (মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক : ২/৫৪১)।

 

আর দুই রাকাত শেষে যদি বৈঠক না করে তা হলেও তার ফরজ বাতিল হয়ে ওই নামাজ নফল হয়ে যাবে। তাই এ অবস্থায় তাকে পুনরায় দুই রাকাত ফরজ পড়ে নিতে হবে। (মারাকিল ফালাহ : ২৩১; শরহুল মুনইয়াহ : ৫৩৯; আদ্দুররুল মুখতার : ২/১২৮)

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন