তালিকায় জায়গা করে নেয়া ১০টি বাড়ি হলো- বাকিংহাম প্যালেস, অ্যান্টিলিয়া, ভিলা লিওপোল্ডা, ভিলা লেস সেড্রেস, লেস পালাইস বুলস, দ্য ওডিয়ন টাওয়ার পেন্টহাউস, ফোর ফেয়ারফিল্ড পন্ড, ১৮-১৯ কেনসিংটন গার্ডেনস, বিয়ন্স অ্যান্ড জে-জেড মালিবু ম্যানশন ও এলিসন এস্টেট।
আসুন জেনে নিই পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ১০ বাড়ি সম্পর্কে-
বাকিংহাম প্যালেস
বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল, দামি বাড়ি বাকিংহাম প্যালেস। এর অবস্থান যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। এটি ব্রিটিশ রাজার আনুষ্ঠানিক বাসভবন ও প্রশাসনিক দফতর। এর দাম ৪৯০ কোটি মার্কিন ডলার।
মূলত ১৭০৫ সালে নির্মাণ করা হলেও প্রাসাদটিতে বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু সংস্কারকাজ চালানো হয়েছে। এটি বর্ধিতও করা হয়েছে। ব্রিটিশ রাজতন্ত্র ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয় এটিকে। প্রাসাদে আছে নয়নাভিরাম বাগান ও ব্যালকনি। বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোতে জনসমক্ষে হাজির হতে রাজপরিবারের সদস্যরা ওই ব্যালকনিতে আসেন। এ ছাড়া প্রাসাদে একটি শিল্পসংগ্রহশালা ও জমকালো অনুষ্ঠানস্থল আছে।
অ্যান্টিলিয়া
মুম্বাইয়ের আলতামাউন্ট সড়কে অবস্থিত এই বিলাসবহুল বাড়িটি। ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে বাড়িটি নির্মিত হয়েছে। ভারতের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের মুকেশ আম্বানি এই বাড়ির মালিক।
চার লাখ বর্গফুটের এই আলিশান বাড়িটিতে মোট ফ্লোর সংখ্যা ২৭টি ও এর উচ্চতা ৫৭০ ফুট। এই বাড়ির ফ্লোর সংখ্যা ২৭ হলেও বেশ কয়েকটি ফ্লোর স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু। এই ফ্লোরগুলো একেকটা দুই বা তিন তলার সমান। তাই ফ্লোর সংখ্যা বাদ দিয়ে উচ্চতায় হিসেব করলে বাড়িটি প্রায় ৪০ তলা ভবনের সমান উঁচু। বিলাসবহুল এ বাড়িতে আছে ৩টি হেলিপ্যাড, ১৬৮টি গাড়ির ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি গ্যারেজ, কয়েকটি সুইমিংপুল, ১টি থিয়েটার ও ১টি স্নো রুম। এই বাড়ি নির্মাণে মুকেশ আম্বানিকে খরচ করতে হয়েছিলো ১৪ হাজার কোটি রুপি বা ১০০ কোটি ডলারের বেশি। তবে এই বাড়ির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার।
ভিলা লিওপোল্ডা
বিলাসবহুল এ বাড়িটির অবস্থান ফ্রান্সের ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরাতে। এ বাড়ি মূলত বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় লিওপোল্ডের। তার স্ত্রীর জন্য ভিলাটি তৈরি করা হয়েছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বাড়িটিকে সামরিক হাসপাতাল হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। ১৯২০-এর দশকে মার্কিন স্থপতি ওগডেন কডম্যান জুনিয়র বাড়িটিকে ‘নিও প্যালাডিয়ান মাস্টারপিস’এ পরিণত করেন। বাড়িটির দাম ৭৫ কোটি ডলার।
ভিলা লে সেদ্রেস
ভিলা লেস সেদ্রেসও ফ্রান্সের ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরাতে অবস্থিত। ১৯০৪ সালে বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় লিওপোল্ড এটি অধিগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে বাড়িটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ভিলা লেস সেদ্রেস। এটি ১৮৩০ সালের দিকে নির্মাণ করা হয়।
১৮ হাজার বর্গফুটের বাড়িটিতে আছে ১৪টি শোবার ঘর, ১টি বলরুম ও ১টি বিশাল গ্রন্থাগার, যেখানে বিরল অনেক বই পাওয়া যায়। এ বাড়িটির দাম ৪৫ কোটি ডলার।
লেস পালাইস বুলস
ফ্রান্সের কানে এ বাড়ি অবস্থিত। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৯ সালের মধ্যে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। বাড়িটি প্রায় ১৩০০ হাজার বর্গফুটের।
বাড়িটিতে আছে একটি অভ্যর্থনা হল, ৫০০ আসনের একটি ছাদখোলা অ্যাম্ফিথিয়েটার, ১০টি শোবার ঘর, কয়েকটি সুইমিংপুল ও কৃত্রিম জলপ্রপাত আছে। বিলাসবহুল বাড়িটির দাম ৪২ কোটি ডলার।
দ্য ওডিয়ন টাওয়ার পেন্টহাউস
এ বাড়ির অবস্থান মোনাকোতে। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। বাড়িটিতে আছে ৫০০ আসনের ছাদখোলা অ্যাম্ফিথিয়েটার, ছাদের ওপর সুইমিংপুল।
বাড়িটিতে আরও আছে ব্যক্তিগত প্রেক্ষাগৃহ। বিলাসবহুল বাড়িটির দাম ৩৩ কোটি ডলার।
ফোর ফেয়ারফিল্ড পন্ড
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার বর্গফুটজুড়ে এ বাড়ির অবস্থান। শুধু মূল ভবনই প্রায় ৬৪ হাজার বর্গফুটের।
বাড়িটিতে আছে ২৯টি শোবার ঘর ও ৩৯টি শৌচাগার। একটি বোলিং অ্যালি, টেনিস কোর্ট ও কয়েকটি সুইমিংপুলও আছে সেখানে। ২০০৩ সালে নির্মিত বাড়িটির দাম ২৫ কোটি ডলার।
১৮-১৯ কেন সিং টন গার্ডেনস
লন্ডনে কেনসিংটন এলাকায় অবস্থিত ‘১৮-১৯ কেনসিংটন গার্ডেনস’এ বাড়িটি। এটি ১৮৪৭ সালে নির্মাণ করা হয়। বিলিয়নিয়ারস রো নামে পরিচিত বিশেষ এ সড়কে বিশ্বের কয়েকটি ব্যয়বহুল বাড়ি রয়েছে।
এ সড়কে অনেকগুলো কূটনৈতিক মিশনের অবস্থান। বাড়িটির বর্তমান দাম রয়েছে ২২ কোটি ২০ লাখ ডলার।
বিয়ন্স অ্যান্ড জে-জেড মালিবু ম্যানশন
বিয়ন্স ও জে-জেড দুজনই সংগীতজগতে আলোচিত দুই নাম। তাদের নামানুসারে বাড়িটির নামকরণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মালিবুতে এ বাড়িটির অবস্থান। যথেষ্ট প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের উপযোগী করে বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বাড়ি থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের সৌন্দর্যও উপভোগ করা যায়। বাড়ির নির্মাণকাল ১৯৯৯ থেকে ২০১৪ সাল। বাড়িটির দাম ২০ কোটি ডলার।
এলিসন এস্টেট
ওরাকল করপোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন এ বাড়ির মালিক। বাড়িটি ২০০৪ সালে নির্মাণ করা হয়। ২৩ একর জায়গার উপর ছোট ছোট ১০টি ভবনকে জোড়া দিয়ে অপরূপ সুন্দর এই বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে।
বাড়িটির নকশা জাপানি ঢঙে করা। বাড়িটিতে বাগানসহ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত এ এস্টেটের দাম ২০ কোটি ডলার।