সেপ্টেম্বরের ফিফা উইন্ডোতে জার্মানি বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের দুই ম্যাচ শেষে ৩ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের গ্রুপে তৃতীয় স্থানে আছে। সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা পেতে গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। এই মুহূর্তে গ্রুপ 'এ'র শীর্ষে আছে স্লোভাকিয়া। ২ জয়ে তাদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট।
জার্মানিকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে হার। এর হারের পর আবারও জার্মানির দুর্বলতাগুলো প্রকাশ্যে চলে এসেছে। দলের অবস্থা দেখে কিংবদন্তি টনি ক্রুস বলতে বাধ্য হয়েছেন, বিশ্বকাপ জেতা তো দূরের কথা, প্রতিযোগিতায় নামার থেকেও আলোকবর্ষ দূরে আছে জার্মানি।
২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে জার্মানির দুর্বল শুরু নিয়ে বিতর্ক চলছে। স্লোভাকিয়ার কাছে ২-০ গোলের হারের পর কোচ ইউলিয়ান নাগেলসম্যান দলের মনোভাবের অভাবকেই প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন। তবে, ক্রুস তার পডকাস্ট 'এইনফাচ মাল লুপ্পেন'–এ সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাখ্যা দেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বের হাই-প্রোফাইল ফুটবলারদের কাছে মানসিক স্বাস্থ্য এখনো ট্যাবু: এমবাপ্পে
২০১৪ সালের বিশ্বকাপজয়ী এই মিডফিল্ডারের মতে সমস্যা প্রতিশ্রুতির অভাব নয়, বরং গুণগত মান আর আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি। তিনি বলেন, 'আমাদের মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাসের অভাব আছে, স্ব-সমঝোতার অভাব আছে এবং এমন দুই-তিনজন খেলোয়াড়ের অভাব আছে, যাদের উপর অন্যরা নির্ভর করতে পারে—যাদের মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস থাকে যে, "আমরা সামলে নেব।"–মাঠে প্রকৃত নেতৃত্বের অভাবকেই তিনি বড় সংকট হিসেবে দেখছেন।
ক্রুস জোর দিয়ে বলেন, খেলার স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয় আর একাত্মতার অভাব জার্মানির পারফরম্যান্সকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তার ভাষায়, 'এটা আমাদের সীমাবদ্ধতা। আমি কখনও বলব না যে কেউ এই ম্যাচগুলো খেলতে চায় না।' প্রচেষ্টার অভাবকে ক্রুস মূল সমস্যা মানতে নারাজ।
অন্যদিকে, নাগেলসম্যান দলের অনেক বেশি কঠোর সমালোচনা করেছেন, 'আমাদের মধ্যে কোনো আবেগ ছিল না। আমরা হারার মতো সবকিছু হারিয়েছি।' ভবিষ্যতে তিনি হয়তো প্রতিভার চেয়ে দলের প্রতি নিবেদনকে অগ্রাধিকার দেবেন বলেও ইঙ্গিত দেন, কারণ তার বিশ্বাস, এমন মনোভাব ব্রাটিস্লাভায় আরও ভালো ফল এনে দিতে পারত।
আরও পড়ুন: ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে বুন্দেসলিগার ক্লাবে যোগ দিলেন এরিকসেন
হারের পরও ক্রুস জার্মানির বিশ্বকাপ যোগ্যতা নিয়ে নির্ভার, তবে স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য নিয়ে তিনি বাস্তববাদী ছিলেন। তার সোজাসাপ্টা মন্তব্য, 'এই মুহূর্তে আমরা আলোকবর্ষ দূরে (বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা থেকে), আর আমরা মোটেই ভালো নই। বিশ্বকাপ জেতার কথা বলার মতো অবস্থায় জার্মানি নেই।'
তবে, উন্নতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। উদাহরণ হিসেবে তিনি রিয়াল মাদ্রিদে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন, 'অনেকবার সেপ্টেম্বরে বা অক্টোবরে আমি শুনেছি আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার ফেভারিট নই। কিন্তু মে মাসে পরিস্থিতি ছিল একেবারে ভিন্ন।' একসঙ্গে সমালোচনা ও আশার বার্তা দিয়ে ক্রুস ইঙ্গিত দিলেন—২০২৬ সালের বিশ্বকাপের আগে জার্মানি এখনও পথ খুঁজে নিতে পারে।