১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরের ঘটনা। থাই গায়ক রুয়াংসাক লয়চুসাক যখন মাত্র ২০ বছর বয়সী তখন থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইট টিজি২৬১ দক্ষিণ থাইল্যান্ডের সুরাত থানি বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়।
এতে ১৪৬ জন যাত্রীর মধ্যে ১০১ জন নিহত হন। সে দুর্ঘটনায় জীবিত যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন রুয়াংসাক। যিনি ১১এ নম্বর আসনে বসেছিলেন। প্রায় ২৭ বছর আগের দুর্ঘটনা থেকে রুয়াংসাক বেঁচে ফিরেছিলেন।
আরও পড়ুন:অসুস্থ মালদ্বীপ প্রবাসীকে বিমান টিকিট দিলো হাইকমিশন
সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একমাত্র যে ব্যক্তি জীবিত ছিলেন তিনিও একই আসন ১১এ ভ্রমণ করছিলেন। ঘটনাটি বর্তমানে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই কাকতালীয় ঘটনাটি নিয়ে রুয়াংসাক তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার বিমান দুর্ঘটনার ২৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে আমার গল্প নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে। যা আমাকে এই বিষয়ে আরও গভীরভাবে বলার সুযোগ করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কেবল একটি আসন নম্বর নয়, সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা আমার জীবনে কী পরিবর্তন এনেছে, কী নতুন উপলব্ধি দিয়েছে, সেই উপলব্ধি থেকেই আমি একটি ইংরেজি ভিডিও ক্লিপ তৈরি করছি। যাতে আমার এই বার্তা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বেঁচে যাওয়া মানুষেরা সমাজের জন্য কিছু ফিরিয়ে দিতে বাধ্য। এই দ্বিতীয় জীবন আমাকে সেই দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দিয়েছে।’
এখন, একই আসন নম্বরের মাধ্যমে দুই জীবিত যাত্রীর মধ্যে এই সংযোগ নিয়ে অনলাইনে আগ্রহের বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন যে, ‘সবচেয়ে নিরাপদ আসন’ বলে কোনো সার্বজনীন ধারণা নেই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশনের পরিচালক মিস্টার মিচেল ফক্স বলেছেন, প্রতিটি দুর্ঘটনা ভিন্ন এবং আসনের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে বেঁচে থাকার পূর্বাভাস দেয়া অসম্ভব।
বিমানের বিন্যাস ব্যাপকভাবে ভিন্ন হয়, এবং একটি বিন্যাসে যা একটি ভালো অবস্থান হিসাবে বিবেচিত হয়, তা অন্যটিতে নাও হতে পারে।
সিডনি-ভিত্তিক এভল এভিয়েশন কনসাল্টিংয়ের চেয়ারম্যান মিস্টার রন বার্টশ বলেছেন, এই বিশেষ ক্ষেত্রে, যেহেতু যাত্রী জরুরি নির্গমনের পাশে বসেছিলেন, এটি স্পষ্টতই সেদিন সবচেয়ে নিরাপদ আসন ছিল। কিন্তু এটি সবসময় ১১এ নয়, এটি কেবল এই বোয়িং ৭৮৭-এর নির্দিষ্ট বিন্যাসে ১১এ।
আরও পড়ুন:মালদ্বীপে ইমিগ্রেশন কন্ট্রোলারের সঙ্গে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ
বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা যাত্রীদের মনে করিয়ে দেন যে, বেঁচে থাকা প্রায়শই ভাগ্যের চেয়ে প্রস্তুতির উপর বেশি নির্ভর করে। সুরক্ষা ব্রিফিং শোনা, আপনার নিকটতম নির্গমন পথ চিহ্নিত করা এবং দেরি না করে ক্রুদের নির্দেশাবলী অনুসরণ করা আপনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।
]]>