বাংলাদেশি তরুণীকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর, ৪ জনকে পুশইন!

১ সপ্তাহে আগে
পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) একদিকে এক বাংলাদেশি তরুণীকে বিজিবির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছে, অন্যদিকে একই দিনে নতুন করে চারজনকে পুশইন করেছে বাংলাদেশে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে সময় সংবাদকে এক তরুণীকে হস্তান্তর করাসহ চারজনের পুশইনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পঞ্চগড়-১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম।


এর আগে, শিলিগুড়িতে আটকের পর বিএসএফ বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে সৌজন্য বৈঠকের মাধ্যমে পপি রায় (২২) নামে ওই তরুণীকে বাংলাবান্ধা বিওপির বিজিবি সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে।


এদিকে, একই দিনে রাত ৮টার দিকে বিজিবির বাংলাবান্ধা বিওপির টহলদল বিএসএফের পুশইন করা মা আছমা খাতুন (৩৫), ছেলে সামির মোড়ল (১৭), সালাম মোড়ল (১৫) ও মেয়ে শাহিনাকে (৭) আটক করে।


জানা গেছে, হস্তান্তর হওয়া পপি রায় গত এক বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান করে শিলিগুড়ির একটি মন্দিরে কাজ করে আসছিলেন। গত বুধবার (৩০ জুলাই) তাকে শিলিগুড়ি পুলিশ আটক করে বিএসএফের ফুলবাড়ী ক্যাম্পে হস্তান্তর করে।


পরে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিএসএফের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী পঞ্চগড়-১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা পপির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পরিচয় নিশ্চিত করে। রাতে বাংলাবান্ধা বিওপির সীমান্ত পিলার ৭৩১/১৬-আর এ কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে সৌজন্য বৈঠকের মাধ্যমে তাকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। হস্তান্তর করা পপির বাড়ি দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থানার বাজুং গ্রামে।


আরও পড়ুন: নওগাঁ সীমান্ত দিয়ে ১০ বাংলাদেশিকে পুশইন


এদিকে একইদিনে রাত ৮টার দিকে বিজিবির বাংলাবান্ধা বিওপির সীমান্ত পিলার ৭৩২/৪-এস এলাকা থেকে বিজিবির বিশেষ টহলদল বিএসএফ কর্তৃক পুশইন হওয়া আছমা খাতুন, ছেলে সামির মোড়ল, সালাম মোড়ল ও মেয়ে শাহিনাকে আটক করে। তাদের বাড়ি যশোর জেলার সারসা থানার বাইফুলা গ্রামে।


আটক চারজন জিজ্ঞাসাবাদে জানান, দীর্ঘদিন মুম্বাইয়ে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন, সেখানে আছমা খাতুনের স্বামী সেলিম মোড়ল একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে অবস্থান করছেন। ভারতের পুলিশ তাদের মুম্বাই থেকে আটক করে এবং মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত হেফাজতে রাখেন। পরে তাদেরসহ ১৫০ জনকে বিমানে শিলিগুড়ি পাঠানো হয়। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএসএফ ওই চারজনকে সীমান্ত পিলার ৭৩২/৪-এস দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করে। তারা বাংলাবান্ধা সীমান্ত পার হয়ে স্থানীয় এক বাড়িতে দিনভর আশ্রয় নেন, পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবি তাদের রাতে আটক করে।


বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় বিএসএফের ফুলবাড়ী ক্যাম্পের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে প্রতিবাদলিপি প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।


এ বিষয়ে পঞ্চগড়-১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, ‘এক তরুণীকে বিজিবির হাতে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। এদিকে নতুন করে পুশইন করা আরও চারজনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’


আরও পড়ুন: বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ৫ জনকে পুশইন


এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পঞ্চগড় সদর উপজেলার নীলফামী-৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ ঘাগড়া সীমান্ত এলাকায় পুশইন করা নারী-পুরুষসহ ১০ জনকে ও পঞ্চগড়-১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ ভজনপুর এলাকা থেকে আরও সাত পুরুষসহ ১৭ জনকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি।


উল্লেখ্য, গত দুই-তিন মাসে নয় দফায় পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ১৪০ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। এবার ১০ম বারের মত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত ১৭ জনকে পুশইনের পর রাতে এক তরুণীকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে আরও চারজনসহ দিনভর মোট নতুন করে ২১ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বিএসএফ।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন