খবর পেয়ে গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পরে। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার বিপুল হোসেন বলেন, ‘বিকেলে অগ্নিকাণ্ডের খবরপেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এসময় উত্তেজিত জনতা অগ্নি নির্বাপনে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বাধা দেয়। পরে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আবদুল্লাহ খানসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা চালায়। প্রায় একঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন নির্বাপনে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সহায়তা করার জন্য এলাকাবাসীকে অনুরোধ করেন নিহত শিশুর বাবা ইমরান হোসাইন ও দাদা বারেক সিকদার। তাদের অনুরোধে এলাকাবাসী সরে গেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং রাত সাড়ে দশটায় ডাম্পিংয়ের কাজ শেষ করা হয়।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে পিকআপের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
তিনি আরও বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই দুইটি দালান ও তিনটি টিনের ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এতে কমপক্ষে অর্ধকোটির টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া জানান, শুক্রবার বিকেলে শিশুর লাশ হাসপাতাল মর্গ থেকে এলাকায় নিয়ে এলে জানাজা শেষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতা আসামিদের বসতঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনি আরও বলেন, নিহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার চারজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।’
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় সালিশে মারপিটে ইউপি সদস্য নিহত
উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুর দুইটার দিকে স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের ইমরান সিকদারের পাঁচ বছরের ছেলে শিশু সাফওয়ান সিকদার। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে রাতেই গৌরনদী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন সাফওয়ানের দাদা বারেক শিকদার। বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টার দিকে স্থানীয় মান্না বেপারীর বিল্ডিংয়ের পিছনের একটি জমির মধ্যে শিশু সাফওয়ানের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। ওইদিন ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিহতের প্রতিবেশী রোমান চৌধুরী, ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক চৌধুরী, রোমানের স্ত্রী আখি বেগম ও বোন রাবিনা বেগমকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।