বরিশালে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

২ দিন আগে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বরিশালসহ উপকূলীয় এলাকায় টানা বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে। এর প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে পানির স্তরে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা গেছে।

বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি ও বরগুনা জেলার বিভিন্ন নদীতে কোথাও পানি বিপদসীমার ওপরে, আবার কোথাও বিপৎসীমার অনেক নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। 


পানি উন্নয়ন বোর্ড (BWDB) থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, এই নদীগুলোর পানির অবস্থান এখন দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবনে প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলতে পারে।


বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যা ৬টার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে ঝালকাঠির বিশখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার ও তজুমুদ্দিন অংশে ১২ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। ভোলার খেয়াঘাটের তেতুলিয়া নদীতে পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে হিজলার ধর্মগঞ্জ নদীর পানিও বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে, যা হঠাৎ নদীভাঙন বা জলাবদ্ধতার আশঙ্কা বাড়াতে পারে। 

আরও পড়ুন: ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টি ও পানি বৃদ্ধিতে নদীপাড়ে ভয়

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।


বিপরীতে কিছু নদীতে পানির স্তর বিপৎসীমার অনেক নিচে অবস্থান করছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো বরগুনার পাথরঘাটা এলাকার বিশখালী নদী, যেখানে পানি বিপৎসীমার ১৭৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমতলীর বুড়িশ্বর নদীতে পানি ১৬২ সেন্টিমিটার, মির্জাগঞ্জে ৮৬ সেন্টিমিটার ও উমেদপুরের কচা নদীতে ৬৮ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। 


পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচে, গৌরনদীর টরকি নদীতে ১৩৭ সেন্টিমিটার, বাবুগঞ্জে ৪ সেন্টিমিটার, বাকেরগঞ্জে ১১ সেন্টিমিটার এবং কাইটপাড়ায় ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া উজিরপুর ও স্বরূপকাঠি এলাকাতেও পানির স্তর বিপদসীমার যথাক্রমে ৩২ ও ৩৮ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।


এর আগে পাওয়া পর্যবেক্ষণে (প্রায় ২৪ ঘণ্টা আগে) তজুমুদ্দিন, দৌলতখান, ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের কিছু নদীতে পানি বিপৎসীমার অনেক বেশি ওপরে ছিল। দৌলতখানে তখন পানি ৪৬ সেন্টিমিটার ওপরে, তজুমুদ্দিনে ১০২ সেন্টিমিটার ওপরে, আর পিরোজপুরের বলেশ্বরে ২৯ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। বর্তমানে পানি কিছুটা কমলেও বেশ কয়েকটি স্থানে বিপৎসীমার ওপরে থেকে যাচ্ছে, যা স্থানীয় জনসাধারণের জন্য উদ্বেগজনক।

আরও পড়ুন: বরগুনায় বেড়েছে নদ-নদীর পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি আমরা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। যেসব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে, সেসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তীব্র জোয়ার বা আকস্মিক প্লাবনের ঝুঁকি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। 


তিনি জানান, নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিপৎসীমার ওপরে পানি প্রবাহিত হওয়া এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের প্রতি সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন