ববি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের মতবিনিময়

১ সপ্তাহে আগে
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।


মতবিনিময় সভায়, আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক আকাঙ্ক্ষা, শিক্ষাঙ্গণে প্রত্যাশিত ছাত্ররাজনীতির ধারা, শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে মূল্যায়ন ও প্রস্তাবনা, আবাসন ও খাবারের মানোন্নয়ন, শিক্ষাঙ্গনে কাঠামোগত নিপীড়ন, নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতিবন্ধকতাসহ  জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা হয়।


মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম দিপু পাটোওয়ারী , ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম-সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিংকু, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম-সম্পাদক তারেক হাসান মামুন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি-রেজা শরীফ, সহ-সভাপতি কাইয়ুম তালুকদার ও লোকমান রাব্বি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তানভীর রহমান তুলিব ও যুগ্ম সম্পাদক-রুহুল রাজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক রউফুন রীশাদ হামিমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন: রাবির সাবেক উপ-উপাচার্যসহ ১৪৮ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

মতবিনিময় সভায় জহিরুল ইসলাম দিপু পাটোয়ারী বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে অপরাধের রাজত্ব কায়েম করেছে। গেস্টরুম কালচারের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বর নির্যাতন, স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ, জোরপূর্বক মিছিল-মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করানো—এসব ঘটনাই ছাত্ররাজনীতিকে শিক্ষার্থীদের চোখে ঘৃণার প্রতীকে পরিণত করেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ইতিহাসে কখনোই সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক মিছিলে নেওয়া কিংবা রুমে আটকে রেখে নির্যাতনের কোনো নজির নেই। বরং ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং গণতান্ত্রিক চেতনাকে লালন করে কাজ করে আসছে।
আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব রাজনীতির ধারায় ফিরে যেতে চাই। অতীতের গৌরবময় ছাত্ররাজনীতির ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সেই লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।’


আসাদুজ্জামান রিংকু বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে ক্যাম্পাসভিত্তিক ইতিবাচক রাজনীতির ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মানবিক ও কল্যাণমূলক নানা কর্মসূচি পরিচালনা করছে। আপনারা জানেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ‘ছাত্রলীগ’-এর নামধারী সন্ত্রাসীরা শিক্ষাঙ্গনে একের পর এক ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত করছে। এই প্রেক্ষাপটে ছাত্রদল শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের আস্থা অর্জন করছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ ধ্বংস করতে চায়। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করছে এবং ছাত্রদলের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আগামী রাষ্ট্রনায়ক জনাব তারেক রহমান সবসময় বলেছেন—‘সবার আগে বাংলাদেশ’। দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্রদল অতীতেও ঐক্যবদ্ধ ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। বাংলাদেশে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের লড়াইয়ে ছাত্রদলের বহু নেতাকর্মী গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ৫ আগস্ট একটি তাৎক্ষণিক ঘটনা নয়; গত ১৭ বছর ধরে ছাত্রদল প্রকাশ্যে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এ অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় আপনাদের আরও ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’


তারেক হাসান মামুন বলেন, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন প্রথম দেখেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ১৯৭৮ সালে বরিশাল সার্কিট হাউসে এক জনসভায় তিনি বরিশালে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তার এই স্বপ্নের ধারাবাহিকতায় ‘শহীদ জিয়াউর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় বরিশাল আইন, ২০০৬’ অনুযায়ী ২০ নভেম্বর ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আন্তরিকতায় ‘শহীদ জিয়াউর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় বরিশাল’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়।

আরও পড়ুন: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০টি গবেষণা প্রকল্পে ২ কোটি টাকার অনুদান

তিনি বলেন, আজও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ ও আবাসন সংকট, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে নানামুখী সমস্যা সম্মুখীন। এ সংকটসমূহের সমাধান এবং শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষ ও আবাসন সংকট নিরসন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসূরী, অবশ্যম্ভাবী রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।


তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে হেনস্থা, সাইবার বুলিংসহ নানা রকম অপপ্রচারের শিকার হচ্ছেন। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ এবং একটি গুপ্ত সংগঠনের যৌথ প্রয়াসের মাধ্যমে এসব ঘটনা ঘটছে। এখনও সেই চক্রটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ন্যারেটিভ ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়।’ 


এ প্রেক্ষাপটে তারেক হাসান মামুন ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখন সময় এসেছে ঐক্যবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করার। এজন্য সবাইকে তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগঠিত ও সচেতন হতে উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন