গবেষকরা জানিয়েছেন, ব্রি-১০৯ জাতের ধান ১৩০ থেকে ১৮০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। ফসল পরিপক্ব হয়ে ১৪৫ থেকে ১৪৭ দিনের মধ্যে কাটা যায়। হেক্টর প্রতি ফসলের সম্ভাব্য ফলন প্রায় সাড়ে ৬ মেট্রিক টন হতে পারে। এটি কৃষকদের জন্য একটি বড় সম্ভাবনা তৈরি করেছে। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় প্রতিবছর বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, উঁচু জোয়ার এবং নিচু জমিতে দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কারণে ধানের চারা নষ্ট হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েন আমন চাষিরা এবং অনেক সময় মূলধনও ঘরে তুলতে পারেন না।
এই সমস্যা মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রায় দুই দশকের গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন করেছে নতুন জাত ব্রি-১০৯। মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষামূলক চাষ শেষ হয়েছে। প্রথম বছরে এই নতুন জাতের ধান স্থানীয় জাতের তুলনায় দ্বিগুণ ফলন দিয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এ ধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো উপকূলের জলমগ্ন পরিবেশ সহনশীল হওয়া। টানা ২১ দিন পানি থাকলেও চারা নষ্ট হয় না। আশা করি, এই ধানের মাধ্যমে আমনের মৌসুমে ক্ষতি অনেকাংশে কমবে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে কৃষির নতুন সম্ভাবনা ব্রি-১০২
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বরিশাল শাখা বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেজোয়ান বিন হাফিজ প্রান্ত বলেন, ‘ব্রি-১০৯ জাতের ধান মূলত উপকূলীয় এলাকার জন্য উপযোগী। এটি বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের মুখেও টিকে থাকে এবং পরিপক্ব হওয়ার সময় ১৪৫ থেকে ১৪৭ দিনের মধ্যে কাটা যায়। হেক্টর প্রতি ফলন সাড়ে ৬ মেট্রিক টন পর্যন্ত হতে পারে।’
সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হাসিনা খাতুন বলেন, ‘প্রথমবারের মতো মাঠপর্যায়ে পরীক্ষামূলক চাষে স্থানীয় জাতের তুলনায় দ্বিগুণ ফলন পাওয়া গেছে। এটি উপকূলীয় কৃষকদের জন্য দারুণ সম্ভাবনা তৈরি করেছে।’
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বরিশাল মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশিক ইকবাল বলেন, ‘২০০২ সাল থেকে আমরা এই জাতের ধান উদ্ভাবনের গবেষণা শুরু করি। দীর্ঘদিনের গবেষণা শেষে এই সফলতা এসেছে। দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের দীর্ঘ দিনের হতাশা কাটিয়ে এটি একটি ভাগ্য পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।’