বন্দর নিয়ে ফটোকার্ডে ভুল তথ্য, দুঃখ প্রকাশ সময় সংবাদের

১৫ ঘন্টা আগে
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সময় ডিজিটালে প্রকাশিত ফটোকার্ডটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। ভাষণে বন্দর নিয়ে অপপ্রচারকারীদের প্রতিহতের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। কিন্তু ফটোকার্ডটিতে ‘বন্দর বিদেশিদের দেয়ার বিরোধিতাকারীদের প্রতিহত করুন’ বলে উল্লেখ করা হয়, যা ফেসবুকে শেয়ার হওয়ার পরপরই তথ্যগত ভুল থাকায় কর্তৃপক্ষের নজরে আসা মাত্র ফটোকার্ডটি নামিয়ে নেয়া হয়। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে সময় সংবাদ। বন্দর নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। মাঝেমাঝে এমন কথাও শুনেছি যে এ বন্দর বিদেশিদেরকে নাকি দিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমি আগেও জানিয়েছি, চট্টগ্রাম বন্দর হলো বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। বর্তমানে এই হৃৎপিণ্ড অতি দুর্বল। এখন যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় তাকে রেখে দিলে আমাদের অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। এই হৃদপিণ্ডকে বড় করতে হবে। মজবুত করতে হবে। সুঠাম করতে হবে। তা করতে হলে বহু উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অভিজ্ঞদের সাহায্য লাগবে। আমরা যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি তারা বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের সেরা, সবচেয়ে অভিজ্ঞ। তারা ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাসহ বিশ্বজুড়ে বন্দর পরিচালনা করে। তাদের কাজ বন্দর ব্যবস্থাপনা করা, আমাদের লক্ষ্য হলো বন্দর ব্যবস্থাপনার কাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের কাছ থেকে শিখে নেয়া। 

 

তিনি বলেন, আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, যদি ৩১ সালের মধ্যে আমরা বন্দরের কাজ শিখে ফেলি এর পরবর্তী ৫ বছরে অর্থাৎ ৩৬ সালের মধ্যে পৃথিবীর যত দেশে যত বন্দর এই কোম্পানিগুলো চালায় তাদের বহু বন্দর এই বাংলাদেশিরাই পরিচালনা করবে। আপনারা যে বন্দরেই পা দেবেন, দেখবেন সেখানে বাংলাদেশিরা আছেন। বহু লোকের কর্মসংস্থান হবে। বহু লোকের ওপরে ওঠার সুযোগ হবে। তাদের নিজেদের প্রয়োজনেই তারা আমাদের চাকরি দেবে। আগে যেকোনো জাহাজে চড়লে দেখতাম জাহাজের নাবিক চট্টগ্রামের কিংবা সিলেটের। বন্দরের কাজ একবার শিখে নিতে পারলে ভবিষ্যতে আমরা যে বন্দরে যাব না কেন দেখব সেখানে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, সিলেট আর বরিশালের লোক। বাংলাদেশের লোক। আমাদের বন্দর যদি আধুনিক হয়, তা শুধু বাংলাদেশের অর্থনীতিতেই ভূমিকা রাখবে না, বরং আমরা নেপাল, ভূটানসহ পাশ্ববর্তী সব দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবো। এই বন্দরই হবে এই অঞ্চলের অর্থনীতির সমৃদ্ধির চাবিকাঠি। কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত নানা বন্দরের কর্মচাঞ্চল্যে সমগ্র উপকূল অঞ্চল দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এই পুরো অঞ্চলে অনেকগুলো শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে শুধু সমুদ্রের সান্নিধ্য এবং তার ব্যবহারের দক্ষতার কারণে। তার সঙ্গে গড়ে উঠবে আরেকটি নতুন শিল্প। 

 

তিনি আরও বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে সমুদ্রে মাছ পালন, আহরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের শিল্প। এটি আরেকটি নতুন জগত সৃষ্টি করবে। এ ব্যাপারে আমরা আমাদের বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি এবং তারা উৎসাহ সহকারে সাড়া দিয়েছেন। বন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা যাদেরকে আনছি তারা পৃথিবীর যে-সব দেশে কাজ করে সেসব কোনো দেশেরই সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েনি। আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই আপনারা নিজেদেরকে ভিত্তিহীন বিরোধিতা এবং অপপ্রচারের শিকার হতে দেবেন না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বন্দর ব্যবস্থাপনার উদ্যোগে আপনাদের দৃঢ় সমর্থন অব্যাহত রাখুন। যারা বিরোধিতা করছে তাদের প্রতিহত করুন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন